<p>রমজানে নিজের বেপরোয়া খাদ্যাভাসে পরিবর্তন এনে লাগাম টানতে পারেন ওজনের। সে ক্ষেত্রে সাহরি, ইফতার ও রাতের খাবারের তালিকায় কিছু পরিবর্তনই যথেষ্ট। বাড়তি পরিশ্রম করে ঘাম ঝরানোর দরকার নেই। এ ব্যাপারে বারডেম জেনারেল হাসপাতালের খাদ্য ও পুষ্টি বিভাগের প্রধান পুষ্টিবিদ শামসুন্নাহার নাহিদ বলেন, ‘রোজায় কেউ ওজন কমাতে চাইলে প্রথমেই ভাজা ভুনা ইফতারি একেবারেই বাদ দিতে হবে। বাইরের জাংক ফুড পুরোপুরি পরিহার করতে হবে। মেয়োনিজ জাতীয় খাবার বাসাতেও খাওয়া যাবে না। ইফতারি মূলত হতে হবে হালকা, তেল একেবারেই থাকবে না।’</p> <p> </p> <p><strong>ডায়েটের ইফতারি</strong></p> <p>ইফতারে থাকতে পারে টক দই দিয়ে ফল, চিনি কম দিয়ে কাস্টার্ড, চিঁড়া-দুধ-কলা ও ছোলা-মুড়ি। এনার্জির জন্য লেবুর রস, আমের রস খেতে পারেন। দুটি পানীয় জাতীয় খাবার, একটি হালকা ফলের কাস্টার্ড টাইপের খাবার ও ছোলা-মুড়ি খেতে পারেন। তবে ছয়-সাত পদের নানা খাবার নয়। আর পিঁয়াজু, চপ, পুরি তো একেবারেই না। রোজা ভেঙে ভরপেট ইফতারি খেলে চলবে না। রোজার সময় সবচেয়ে বেশি খেতে হবে সাহরিতে। সেই তুলনায় মাঝারি মাত্রায় খেতে হবে ইফতারে। আর রাতে খাবারে খেতে হবে সকালের নাশতার মতো অল্প পরিমাণে।</p> <p> </p> <p><strong>সাহরি বা রাতের খাবার আবশ্যক</strong></p> <p>কেউ কেউ মনে করেন, সাহরি বা রাতের খাবার না খেলে ওজন কমবে। সেই ধারণা একেবারেই ঠিক নয়। পুষ্টিবিদরা জানাচ্ছেন, রোজা রেখে সাহরি বা রাতের খাবার না খেলে ওজন কমবে না, উল্টো বাড়বে। যখনই কেউ খবার খাবে না তখন তার মেটাবলিক রেট কমে যাবে। অর্থাৎ যে খাবারটি খেয়েছে সেটা খরচ হবে না। তাই কোনো এক বেলা না খেলে তাতে দেখা যায় ওজন বরং বাড়ে।</p> <p> </p> <p><strong>রাতের খাবার</strong></p> <p>রাতের খাবার হবে মাঝারি পরিমাণে। রাতের খাবারে থাকতে পারে ভাত, নুডলস, ওটস কিংবা রুটি। রাত ৯টা থেকে ১০টার মধ্যেই রাতের খাবার সেরে ফেলা ভালো।</p> <p> </p> <p><strong>সাহরির খাবার</strong></p> <p>অনেকে রাতের খাবার দেরি করে খেয়ে সাহরির চাহিদা পূরণ করেন। তবে রাতের একেবারে শেষ ভাগে আমাদের সাহরি করা উচিত। কারণ ইফতারের আগ পর্যন্ত দীর্ঘ সময় আমাদের দেহ ক্লান্ত হয়ে পড়ে। শরীরের চাহিদা অনুযায়ী সবচেয়ে বেশি খাবার খেতে হবে সাহরিতে। সাধারণ সময়ের দুপুরের খাবারের মতো পরিমাণ থাকতে পারে সাহরিতে। ভাত, রুটি, মাছ-মাংস, দুধ, ডিম, দই—এসব নানা ধরনের খাবার থাকতে পারে। তবে খাবারে আমিষ, শর্করা, ভিটামিন, স্নেহ থাকলে ভালো। তাতে খাবারে ব্যালেন্স থাকে।</p> <p> </p> <p><strong>ব্যায়াম</strong></p> <p>যাঁদের ডায়াবেটিস আছে তাঁদের রোজা রেখে ব্যায়াম করা উচিত নয়। তবে যাঁদের ওজন উচ্চতার তুলনায় বেশি, তাঁরা ব্যায়াম করতে পারেন। ব্যায়াম করতে হবে ইফতারের পরে এবং রাতের খাবারের মাঝামাঝি সময়। এটি ওজন কমাতে বেশ কাজে দেবে। তবে রোজা রেখে সকালে ব্যায়াম না করাই ভালো। কারণ সে ক্ষেত্রে শরীর দুর্বল হয়ে যাবে। অসুস্থ হয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকবে।</p> <p>রোজায় ওজন কমানোর ক্ষেত্রে খাবারের কোনো সাধারণ নির্দিষ্ট পরিমাণ নেই। সেটি নির্ভর করবে যার যার নিজস্ব ওজন ও উচ্চতার ওপর। তাই পুষ্টিবিদ ও চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়েই ডায়েট করা ভালো। অন্যথায় অসুস্থ বা দুর্বল হয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে।</p>