<p>গান গেয়ে সবার মন রাঙাতে চান রাঙ্গুনিয়ার ‘সুরের পাখি’ মমতা দাশ। তিনি গান গেয়ে দেশের প্রতিষ্ঠিত শিল্পী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। ছোটবেলা থেকে গানের প্রতি তাঁর ভালোবাসা থেকেই প্রথম গানের স্কুলে ভর্তি হয়েছিলেন মমতা। ধীরে ধীরে রাঙ্গুনিয়াসহ আশপাশের উপজেলায় এখন প্রতিষ্ঠিত সংগীতশিল্পী হিসেবে নিজেকে তিনি পরিচিত করতে সমর্থ হয়েছেন। গান করে চলছেন রাঙামাটি বেতার কেন্দ্রসহ বিভিন্ন স্টেজ প্রোগ্রামে।</p> <p>নিয়মিত গান পরিবেশন করে রাঙ্গুনিয়া কাপ্তাইসহ আশপাশের উপজেলার দর্শকদের মন জয় করে নিয়েছেন। স্বীকৃতি হিসেবে পেয়েছেন অসংখ্য ছোট বড় পুরস্কার। এর মধ্যে উপজেলা পর্যায়ে আয়োজিত সংগীত প্রতিযোগিতায় শ্রেষ্ঠ শিল্পী হিসেবে নির্বাচিত হয়ে অংশ নিয়েছেন চট্টগ্রাম জেলা ও বিভাগীয় সংগীত প্রতিযোগিতায়। এ ছাড়া রাঙ্গুনিয়া সরকারি কলেজ, রাখাল ফাউন্ডেশন, স্বরগম সংগীতচর্চা কেন্দ্রসহ অসংখ্য পুরস্কার ও সনদ যুক্ত হয়েছে মমতার ঝুলিতে।</p> <p>সম্প্রতি চট্টগ্রামের একটি রিয়েলিটি শোর সেরা দশের মধ্যে একজন হিসেবে নিজের অবস্থান দখল করে জানান দিয়েছেন তাঁর যোগ্যতার পরিমাপ। রাঙ্গুনিয়ার উঠতি এই তরুণ কণ্ঠশিল্পীর গায়কী ঢং ও উচ্চারণ শৈলীতে মুগ্ধ তরুণ দর্শকরা ইতোমধ্যে নিজেদের প্রিয় শিল্পীর তালিকায় স্থান দিয়েছেন মমতাকে।</p> <p>সংগীতশিল্পী মমতা দাশের বাড়ি উপজেলার স্বনির্ভর রাঙ্গুনিয়া ইউনিয়নের মজুমদারখীল গ্রামে। দিনমজুর বাবা জগত্নাথ দাশ ও গৃহিণী মা রাধা রাণী দাশ। দুবোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে মমতা সবার বড়। পরিবারে ‘নুন আনতে পান্তা ফুরোয়’ এমন অবস্থার মধ্যেও মমতা গান করেই পরিবারের অসচ্ছলতা দূর করতে চান।</p> <p>রাঙ্গুনিয়া সরকারি কলেজের স্নাতক শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী মমতা মেধার স্বাক্ষর রেখেছেন নিজ কলেজেও। শিক্ষকরাও তাঁকে সহযোগিতা করেন। ছোটবেলা থেকেই গানের প্রতি তাঁর বিশেষ আকর্ষণ ছিল এবং সেখান থেকেই শিল্পী হয়ে উঠেন বলে জানান তিনি। বর্তমানে তিনি গান গেয়ে দর্শক মন জয় করে চলেছেন চট্টগ্রামের একজন প্রতিষ্ঠিত সংগীত শিল্পী হিসেবে।</p> <p>চট্টগ্রামে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত প্রোটন গাড়ির সৌজন্যে একটি রিয়েলিটি শোতে অংশ নিয়ে সেরা ১০ জনের একজন হয়েছেন রাঙ্গুনিয়ার মমতা। সেখান থেকে তিনি বর্তমানে গানের প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে যাচ্ছেন কক্সবাজারে।</p> <p>কক্সবাজার যাওয়ার পথে তাঁদেরকে পথে পথে বিভিন্ন স্টেজে গান গেয়ে বিচারক এবং দর্শকদের মন জয় করতে হবে। সেরা দশ থেকে প্রথম তিনজনের মধ্যে নির্বাচিত হতে পারলে তিনি সুযোগ পাবেন মালয়েশিয়ার বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে গান করার। মালয়েশিয়ায় গিয়ে বাংলা ভাষায় গান করে দেশের সম্মান উজ্জ্বল করার প্রত্যয় নিয়ে দিনেরাতে সাধনা করছেন মমতা।</p> <p>মমতা দাশ বলেন, ‘আমি ছোটবেলা থেকে গান শিখতে ও গাইতে খুব ভালোবাসতাম। একদিন আমি বই নিয়ে পড়তে বসি। তখন রাখাল ছেলে কবিতাটি গানের মতো করে সুর দিয়ে গাচ্ছিলাম। বিষয়টা আমার মেজ পিসি দেখে গানের প্রতি আমার ভালোবাসাটা বুঝতে পারেন। তিনি আমাকে প্রথম গানের স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেন। আমার গানের প্রথম গুরু ছিলেন শ্রীবাস দাশ। তাঁর কাছে ৩ মাস গান শিখেছি। এরপর রাতুল বৈদ্য স্যারের কাছেও গান শিখেছি। আমি বিভিন্ন স্টেজ প্রোগ্রামের পাশাপাশি রাঙামাটি বেতার কেন্দ্রেও গান করেছিলাম।’</p> <p>‘গান আমার জীবন। গান আমার সাধনা। আমি গান করতে এবং শুনতে খুব ভালোবাসি। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন যেন দেশের একন প্রতিষ্ঠিত শিল্পী হতে পারি।’-যোগ করেন মমতা।</p> <p>মমতার সঙ্গীত গুরু রাতুল বৈদ্য বলেন, ‘নিজের ইচ্ছাশক্তিকে কাজে লাগিয়ে চেষ্টা করলে মমতা সংগীত জগতে আরো অনেক দূর এগিয়ে যাবে। তার সাবলীল উচ্চারণ ও গায়কী উপস্থাপনা জাতীয় মানের শিল্পীদের চেয়ে কোনো অংশে কম নয়।’ মফস্বলের উঠতি এই কৃতী শিল্পী সকলের সহযোগিতা পেলে দেশের সংগীত জগতে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখবেন বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।</p>