জাতিসংঘের পরবর্তী মহাসচিব হিসেবে মনোনীত আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, বিশ্বের সবচেয়ে অসহায় মানুষের জন্য কাজ করবেন তিনি।
পর্তুগালের এই সাবেক প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এই পদের জন্য মনোনীত হওয়ায় 'কৃতজ্ঞতা ও শ্রদ্ধাবনত' বোধ করছেন তিনি।
বর্তমান বিশ্বে যুদ্ধ ও সন্ত্রাসবাদে ক্ষতিগ্রস্ত, অধিকার হরণ, দারিদ্র্য ও অবিচারের শিকারদের জন্য কাজ করার কথা বলেছেন গুতেরেস।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ বৃহস্পতিবার সর্বসম্মতিক্রমে পরবর্তী মহাসচিব হিসেবে গুতেরেসকে মনোনীত করে। পাঁচ বছরের জন্য তার নিয়োগ চূড়ান্ত করতে আগামী সপ্তাহে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ বসতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।
১০ বছর জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক কমিশনের নেতৃত্ব দিয়ে আসা গুতেরেস আগামী বছরের শুরুর দিকে বান কি-মুনের কাছ থেকে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন।
নিরাপত্তা পরিষদে মনোনয়ন চূড়ান্ত হওয়ার পর লিসবনে গুতেরেস সাংবাদিকদের বলেন, "আমার এখন যে অনুভূতি হচ্ছে তা প্রকাশে আমার কাছে দুটি শব্দ আছে-কৃতজ্ঞতা ও শ্রদ্ধাবনত।"
"শ্রদ্ধাবনত (যা আমি বোধ করছি) আমাদের সামনে যে বিপুল চ্যালেঞ্জ, আধুনিক বিশ্বের ভয়াবহ জটিলতা তা নিয়ে। তা ছাড়া এটা সবচেয়ে অসহায়, যুদ্ধ, সন্ত্রাসবাদ, অধিকার হরণ, দারিদ্র্য ও অবিচারের শিকারদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য প্রয়োজন।"
বান কি-মুন আগেই উত্তরসূরি হিসেবে গুতেরেসকে 'চমৎকার পছন্দ' বলে বর্ণনা করেছেন। "পর্তুগালের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তার অভিজ্ঞতা, বিশ্বের নানা বিষয় সম্পর্কে তার বিস্তারিত জ্ঞান এবং তার ধীশক্তি একটি কঠিন সময়ে জাতিসংঘকে নেতৃত্ব দিতে তাকে সক্ষম করে তুলবে," বলেন তিনি।
১৯৯৫ থেকে ২০০২ সাল মেয়াদে পর্তুগালের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন সোশালিস্ট পার্টির নেতা গুতেরেস। এরপর ২০০৫ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক কমিশনারের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। এ সময় সিরিয়া, আফগানিস্তান ও ইরাকের মতো দেশগুলোর শরণার্থী সংকট মোকাবিলায় তাকে ব্যস্ত থাকতে হয়। যুদ্ধবিধ্বস্ত শরণার্থীদের আরও বেশি সহায়তা দিতে পশ্চিমা সমাজকে বার বার অনুরোধ করেন তিনি।
মহাসচিব হিসেবে গুতেরেসকে জাতিসংঘের প্রধান কূটনীতিক ও শীর্ষ ‘প্রশাসনিক কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করতে হবে।
বিবিসির কূটনৈতিক প্রতিবেদক জেমস ল্যান্ডেল বলেন, নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচটি স্থায়ী সদস্য দেশের হাতে জাতিসংঘের মূল ক্ষমতা থাকলেও মহাসচিবকে অনেক গুরুদায়িত্ব পালন করতে হয়।
এর মধ্যে আছে বিশ্বশক্তিগুলোর প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক চাহিদার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা, গোপনে ও প্রকাশ্যে আন্তর্জাতিক বিরোধ নিষ্পত্তিতে ভূমিকা রাখা এবং বিশাল একটি আমলাতন্ত্র পরিচালনা।
মহাসচিব হিসেবে তার মনোনয়নকে স্বাগত জানিয়েছেন জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনান "আন্তোনিও গুতেরেস একজন উচ্চগুণসম্পন্ন প্রার্থী, যিনি অনেক কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য ভালোভাবে প্রস্তুত আছেন।"
তিনি যাতে এই কঠিন সময়ে মেয়াদ পূর্ণ করতে পারেন সেজন্য নিরাপত্তা পরিষদ ও জাতিসংঘের অন্যান্য সদস্যদের তাকে সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন আনান।
এই দায়িত্ব পালনে গুতেরেসের 'ব্যাপক যোগ্যতা' রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন নিরাপত্তা পরিষদের বর্তমান সভাপতি রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত ভিতালি চুরকিন।
যখন সারা দুনিয়া অনেক বিষয়ে দ্বিধাবিভক্ত, সেই সময় দায়িত্ব নিয়ে গুতেরেস জাতিসংঘকে নেতৃত্বের পরবর্তী ধাপে নিয়ে যাবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন যুক্তরাজ্যের প্রতিনিধি ম্যাথিউ রাইক্রফট।
মহাসচিব পদে গুতেরেসের মনোনয়ন বিভিন্ন মহল থেকে অভিনন্দিত হলেও হতাশা রয়েছে জাতিসংঘের নেতৃত্বে প্রথমবারের মতো একজন নারীকে পাওয়ার জন্য প্রচার চালানোদের।
জাতিসংঘ মহাসচিব পদে একজন দুই মেয়াদে সর্বোচ্চ ১০ বছর দায়িত্ব পালন করতে পারেন।
মন্তব্য
আলোচিত সংবাদ
ব্যাখ্যা ছাড়া সর্বসাধারণের পক্ষে কোরআন বোঝা সম্ভব নয়
আমাদের জাহিদ গুগলের ম্যানেজার
বিশ্বের যেসব দেশ ভ্রমণে ভিসা লাগে না...
সিগারেট তৈরির একটি মূল উপাদান ইঁদুরের বিষ্ঠা!
সারাদিন বিছানায় শুয়ে অন্যের রক্ত যোগাড় করেই দিন কাটে মিমের
সীমান্তে সেনা, অস্ত্রের মহড়া মিয়ানমারের