<p>গত কয়েক দশকে সারা বিশ্বেই ভাতের জনপ্রিয়তা চোখে পড়ার মতো বেড়েছে। ওয়াশিংটন ডিসি হোক কী ক্রেমলিন, সুমাত্রা হোক কী সিডনি, বিশ্বের নানা প্রান্তে ভাতকে কেন্দ্র করে নানা পদ তৈরি হচ্ছে এবং নানা ভাষা, নানা জাতির মানুষ তা আনন্দের সঙ্গে গ্রহণও করছেন। কিন্তু সমস্যাটা একটা জায়গাতেই। ভাত তৈরির সময় সবাই একটা ভুল করে ফেলছেন।</p> <p>কী সেই ভুল? ভাত রান্নার পর মাড়টা দিচ্ছেন ফেলে। ফলে চালের যা গুণাগুণ তার সিংহভাগই সেই পানির সঙ্গে চলে যাচ্ছে। ফলে ভাতের সঙ্গে যে পরিমাণ পুষ্টির আমাদের শরীরে প্রবেশ করা উচিত, তা করছে না। ফলে ভাত খেয়ে শুধু ওজনই বাড়ছে, আর কিছু সুফল মিলছে না।</p> <p>একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে শরীর এবং ত্বককে চাঙ্গা রাখতে ভাতের মাড়ের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। এমনকি একাধিক রোগের উপশমেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে ভাতের মাড়।</p> <p>প্রসঙ্গত, একাধিক প্রাচীন গ্রন্থেও এই বিষয়ের উল্লেখ পাওয়া যায়। সেখানেও ভাতের ফ্যানকে কাজে লাগিয়ে শরীরকে কীভাবে রোগমুক্ত রাখা যায়, সে নিয়ে অনেক কিছু লেখা রয়েছে। এই লেখায়ও আধুনিক বিজ্ঞান এবং প্রাচীন শাস্ত্রকে মিলিয়ে ভাতের ফ্যানের এমন কিছু উপকারিতা প্রসঙ্গে আলোচনা করা হবে, যা পড়তে পড়তে আপনি অবাক হবেনই।</p> <p>একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে ভাতের মাড়ে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, খনিজ, ভিটামিন ই সহ আরও বেশ কিছু কার্যকরী উপাদান আমাদের শরীরে গঠনে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। সেই সঙ্গে আরও নানা কাজে লাগে। যেমন...</p> <p><img alt=\"\" src=\"/ckfinder/userfiles/images/vaaat1.jpg\" style=\"height:450px; width:650px\" /></p> <p><strong>১. চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়</strong><br /> সপ্তাহে তিনবার গোসলের আগে ভাতের মাড় ভাল করে চুলে লাগান। কিছু সময় অপেক্ষা করার পর হালকা গরম পানি দিয়ে চুলটা ধুয়ে নিন। এমনটা করলে চুলের গোড়ায় পুষ্টির অভাব দূর হবে। ফলে চুল পড়া সহ একাধিক স্কাল্প সম্পর্কিত রোগের প্রকোপ কমতে শুরু করবে। সেই সঙ্গে চুলের উজ্জ্বলতাও বাড়বে।</p> <p><img alt=\"\" src=\"/ckfinder/userfiles/images/vaat2.jpg\" style=\"height:450px; width:650px\" /></p> <p><strong>২. ত্বককে সুন্দর করে</strong><br /> মাড়কে প্রাকৃতিক টোনারও বলা যেতে পারে। বেশ কিছু কেস স্টাডি করার সময় গবেষকরা লক্ষ করেছেন, প্রতিদিন মুখে ভাতের মাড় লাগিয়ে ম্যাসেজ করলে ত্বকের ছিদ্র ছোট হয়, সেই সঙ্গে স্কিনের উপরিঅংশে জমে থাকা মৃত কোষের আবরণ সরে যায়। ফলে স্বাভাবিকবাবেই ত্বক সুন্দর হয়ে ওঠে। প্রসঙ্গত, রাতে শুতে য়াওয়ার আগে একটা তুলোর সাহায্যে ভাতের মাড় সারা মুখে লাগিয়ে ভাল করে ম্যাসেজ করে সারা রাত রেখে দিন। সকালে উঠে মুখটা ধুয়ে নিন। এমনটা রোজ করলেই দেখবেন ত্বক নিয়ে আর কোনও চিন্তা থাকবে না।</p> <p><img alt=\"\" src=\"/ckfinder/userfiles/images/vaat3.jpg\" style=\"height:450px; width:650px\" /></p> <p><strong>৩. ব্রণের প্রকোপ কমায়</strong><br /> প্রতিদিন দুবার করে ভাতের মাড় ভাল করে মুখে লাগালে ব্রণ কমতে শুরু করে। কারণ এতে উপস্থিত অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান ত্বকের অন্দরে প্রদাহের মাত্রা হ্রাস করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ব্রণ কমে যায়।</p> <p><strong>৪. ডায়ারিয়ার চিকিৎসায় কাজে লাগে</strong><br /> পানির মতো পায়খানা হয়েই চলেছে? সেই সঙ্গে পেটে এমন ব্যথা যে আত্মারাম খাঁচা হওয়ার যোগাড়! তাহলে এখন থেকেই ভাতের মাড় খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন উপকার মিলবে। আসলে পেট খারাপের সময় এক গ্লাস ভাতের মাড়ে অল্প লবণ দিয়ে খেলে শরীরে উপকারী খনিজের মাত্রা বাড়তে শুরু করে। ফলে রোগের প্রকোপ কমতে শুরু করে।</p> <p><strong>৫. এনার্জির ঘাটতি দূর করে</strong><br /> শরীরচর্চার আগে এক গ্লাস ভাতের মাড় খেলে শরীরে ৮টি উপকারী অ্যামাইনো এসিডের মাত্রা বৃদ্ধি পায়, যা এক্সারসাইজের সময় পেশির গঠনে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। সেই সঙ্গে ভাতের মাড়ে উপস্থিত কার্বোহাড্রেট এনার্জির ঘাটতি দূর করতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।</p> <p><img alt=\"\" src=\"/ckfinder/userfiles/images/vaat4.jpg\" style=\"height:450px; width:650px\" /></p> <p><strong>৬. কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে</strong><br /> একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত ২ গ্লাস করে ভাতের মাড় খাওয়ার অভ্যাস করলে বাওয়েল মুভমেন্টে উন্নতি ঘটে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই কোষ্ঠকাঠিন্যের উপশম ঘটতে শুরু করে।<br /> <span style=\"line-height:1.6em\">সূত্র : বোল্ড স্কাই</span></p>