<p>সামাজিক উন্নয়ন ও স্বাস্থ্যের সঙ্গে পরিবেশের সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে, দীর্ঘদিন ধরেই গবেষকরা এই দাবি করে আসছিলেন। তাদের এই দাবিকে সমর্থন করেছে জাতিসংঘের সাম্প্রতিক একটি প্রতিবেদন। সেই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বজুড়ে প্রতি চার জনের মধ্যে এক জনের মৃত্যুর জন্য দায়ী মানুষের সৃষ্টি করা পরিবেশ দূষণ।</p> <p>কেনিয়ার নাইরোবিতে পাঁচ দিনব্যাপী জাতিসংঘের পরিবেশ সংক্রান্ত সম্মেলনে ১৩ মার্চ, বুধবার ‘গ্লোবাল এনভায়রনমেন্ট আউটলুক’ (জিইও) নামের গবেষণাপত্রটি প্রকাশ করা হয়।</p> <p>রিপোর্টে আরো বলা হয়, দূষিত পরিবেশ ও জলবায়ুর কারণে তৈরি হচ্ছে মহামারীর মতো পরিস্থিতি। সমুদ্রের জলস্তর বাড়ছে, তৈরি হচ্ছে ঘন ঘন খরা, বন্যা বা ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড়ের পরিস্থিতি। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে আন্তর্জাতিক অর্থনীতিতেও।</p> <p>‘গ্লোবাল এনভায়রনমেন্ট আউটলুক’ (জিইও)-এর এই রিপোর্টটি তৈরি হয়েছে গত ৬ বছর ধরে। ৭০টি দেশের ২৫০ জন বিজ্ঞানী এই রিপোর্টটি প্রস্তুত করতে কাজ করেন। মূলত এই গবেষণায় তারা দেখতে চেয়েছেন যে, জনস্বাস্থ্য বা পাবলিক হেলথের উপর দূষিত পরিবেশের প্রভাব কতখানি।</p> <p>এছাড়াও রিপোর্টটিতে উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলির মধ্যে একটি তুলনামূলক পরিসংখ্যানও প্রকাশ করা হয়।</p> <p>গবেষণায় দেখা গেছে যে, বায়ুদূষণের কারণে বছরে প্রায় ৭০ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়। এরপর পানিদূষণ ও পানীয় জলের অভাবে ডায়েরিয়া ও অন্যান্য রোগের ফলে মারা যান আরও ১৪ লাখ মানুষ। গবেষকদের হিসাব অনুযায়ী, শুধু ২০১৫ সালেই ৯০ লক্ষ মানুষ পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণে মারা গিয়েছেন।</p> <p>ওই রিপোর্টে এশিয়ার উন্নয়নশীল দেশগুলির জন্যেও বিপদের কথা বলা হয়েছে। বলা হয়েছে, এখনই কোনও জরুরি পদক্ষেপ নেয়া না হলে ২০৫০ সালের মধ্যে এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার মতো পিছিয়ে পড়া বা উন্নয়নশীল তৃতীয় বিশ্বের আরও অসংখ্য মানুষ চরম বিপদের মুখে পড়বেন। ধনী দেশগুলির তুলনায় বেশি সমস্যায় পড়বে গরিব দেশগুলোই। তাই পিছিয়ে পড়া দরিদ্র বা উন্নয়নশীল দেশগুলির জীবনযাত্রার মানের উন্নয়ন করতেও স্বাস্থ্যকর পরিবেশ গড়ে তোলার দিকে নজর দেওয়া হয়েছে এই রিপোর্টে।</p> <p>এস্তোনিয়ার পরিবেশমন্ত্রী ও নাইরোবি সম্মেলনের সভাপতি সিম কিসলার জোর দেন পরিবেশ রক্ষার্থে আন্তর্জাতিক আইন আনার উপর। এরমধ্যেই অনেক দেরি হয়ে গেছে, অবিলম্বে তাই কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া উচিৎ বলে দাবি করেন তিনি।</p>