<p>রমেশ সিপ্পি পরিচালিত শোলে-কে আধুনিক ভারতীয় অ্যাকশন মুভির মাইলফলক হিসেবে ধরা হয়। অমিতাভ-ধর্মেন্দ্র-হেমা মালিনি-জয়া ভাদুরি অভিনীত এই সিনেমার ছাঁচ ভেঙ্গে কোনো অ্যাকশন হিন্দি মুভি বানানো দীর্ঘকালের জন্য কঠিন হয়ে পড়ে অন্যদের কাছে।</p> <p>কেউ কি এই এপিক ছবিটির কোনো দৃশ্য অন্যরকম হতে পারতো- এমন কল্পনা করেছেন? সম্ভবত করেননি। তবে বাস্তবে হলো এর শ্বাসরুদ্ধর শেষ দৃশ্যটিই ছিল অন্যরকম। খোদ শোলের নির্মাতা রমেশ সিপ্পি সম্প্রতি বলেছেন এমন কথা। </p> <p>নায়ক-নায়িকাদের বাইরে ভিলেন গাব্বার সিংয়ের চরিত্রে আমজাদ খানের অভিনয় আর সংলাপের জন্যও ছবিটি আলোচিত। আমজাদ খান এই এক ছবিতেই মুম্বাইয়া ছবির ভিলেনদের বাদশাহের তাজটি মাথায় পড়ে নেন। অমিতাভ-ধর্মেন্দ্র-হেমা-জয়ার জনপ্রিয়তা আর বাজারদর তরতর করে বেড়ে যায় সিনেমাপাগল মানুষের কাছে। </p> <p>ছবিটি নিয়ে আলোচনা হয় অবসরপ্রাপ্ত ঠাকুর চরিত্রে অভিনয় করা শক্তিমান অভিনেতা সঞ্জীব কুমারকে নিয়েও। এর কাহিনী সংলাপও অসাধারণ- যদিও এটি বিদেশি কাহিনীর ছায়া অবলম্বনে নির্মিত হয়েছিল।  </p> <p><img alt=\"\" src=\"/ckfinder/userfiles/images/2018/JANUARAY-2018/13/Sholay_gabbar_thakur.jpg\" style=\"border-style:solid; border-width:3px; height:483px; width:800px\" /></p> <p><em><span style=\"color:#B22222\">শোলে চবির বহুল আলোচিত সেই দৃশ্য যাতে গাব্বার সিং দুই হাত কেটে নেয় পুলিশ অফিসার ঠাকুরের</span></em></p> <p>ছবিটির আলোচিত নির্মাতা রমেশ সিপ্পি বললেন চমক জাগানিয়া কথা। তা হলো, ছবির শেষ দৃশ্য তিনি অন্যভাবে শ্যুট করেছিলেন। তাতে দেখা গিয়েছিল চম্বলের ভয়াবহ দস্যু গাব্বারকে হত্যা করে তার হাতে প্রায় পুরো পরিবার হারানো ঠাকুর। কিন্তু সেন্সর বোর্ড তাতে বাধ সাধে। বোর্ড কর্তাদের আপত্তির কারণে নতুন করে দৃশ্য ধারণ করতে হয় যাতে দেখানো হয় ঠাকুর পুলিশের হাতে তুলে দেন গাব্বারকে। </p> <p>জব্বার প্যাটেলের সঞ্চালনায় এক আলোচনা সভায় পুনে ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে (পিআইএফএফ) মজার এ তথ্য জানান সিপ্পি। </p> <p><span style=\"color:#B22222\"><em><strong>আরো পড়ুন  </strong></em></span><a href=\"http://www.kalerkantho.com/online/entertainment/2018/01/13/588870\">ছেলেবেলায় কি করতেন কাজল!</a></p> <p>একজন দর্শক তাকে প্রশ্ন করেন হালে পদ্মাবতী সিনেমা নিয়ে ভারতীয় সেন্সরবোর্ডের কর্মকাণ্ডকে ইঙ্গিত করে। জবাবে সিপ্পি বলেন, শোলের শেষ দৃশ্য আমি অন্যভাবে ধারণ করেছিলাম যেখানে গাব্বারকে হত্যা করে ঠাকুর। কিন্তু তারা (সেন্সর বোর্ড) এর অনুমোদন দিল না। ঠাকুর তার পা দিয়ে গাব্বারকে হত্যা করছে- এটা তারা মানতে পারছিল না। আমিও জটিল অবস্থায় পড়ে যাই- তাহলে ঠাকুর কিভাবে গাব্বারকে হত্যা করবে? তার যেহেতু কোনো হাতই নেই (ঠাকুরের দুই হাত কেটে নিয়েছিল গাব্বার সিং) তাই সে তো বন্দুকও চালাতে পারবে না। খুব বেশি হিংস্রতা দেখানো হয়েছে- এমন দাবিতেও তারা অসন্তুষ্ট ছিল। তারা বললো- ছবির শেষ দৃশ্য বদলাতে হবে আপনাকে। আমি খুশি হতে পারিনি কিন্তু আমি তাদের কথামতো করেছি। </p> <p>অনুষ্ঠানে রমেশকে ‘পিআইএফএফ ডিসটিংগুইশড পারসনালিটি অ্যাওয়ার্ড’ দিয়ে সম্মানিত করা হয়।</p> <p>১৯৭৫ সালে ভারতে জরুরি অবস্থা চলাকালে শোলে মুক্তি পায়। ভারতীয় বাণিজ্যিক সিনেমার জগতে ইতিহাস তৈরি করার সঙ্গে সঙ্গে অনেক পুরস্কার প্রশংসাও পায় ছবিটি। তবে পরে জানা যায় যে এটি বেশ কয়েকটি বিদেশি মুভি নকল করে তৈরি করা হয়েছে। </p> <p><img alt=\"\" src=\"/ckfinder/userfiles/images/2018/JANUARAY-2018/13/ramesh_Sippy_jabbar_patel.jpg\" style=\"border-style:solid; border-width:2px; height:400px; width:600px\" /></p> <p><span style=\"color:#B22222\"><em>রমেশ সিপ্পি</em></span></p> <p>কারও কারও মতে, অন্তত চারটি বিদেশি কাহিনীর মাল-মশলা দিয়ে তৈরি শোলে। এর মধ্যে আছে ১৯৫৪ সালে নির্মিত আকিরা কুরোসাওয়ার সেভেন সামুরাই, ১৯৬৯ সালে নির্মিত দ্য ওয়াইল্ড বাঞ্চ এবং বুচ ক্যাসিডি অ্যান্ড সানড্যান্স কিড, ওয়ান্স আপন এ টাইম ইন দ্য ওয়েস্ট ও দ্য ম্যাগনিফিসেন্ট সেভেন। শেষের হলিউডি ছবিটি তৈরি হয়েছিল জাপানি সেভেন সামুরাইয়ের অনুকরণে।  </p> <p><img alt=\"\" src=\"/ckfinder/userfiles/images/2018/JANUARAY-2018/13/Asami-Hajir_dewan_nazrul.jpg\" style=\"height:400px; width:600px\" /></p> <p><span style=\"color:#B22222\"><em>দেওয়ান নজরুল পরিচালিত আরো একটি সুপারহিট ছবি আসামি হাজির। বাংলাদেশি মুভিতে ওয়েস্টার্ন ধরারা সূচনা বলা যায় এটি</em></span></p> <p>প্রসঙ্গত, শোলে ছবির অনুকরণে বাংলাদেশে দেওয়ান নজরুল নির্মাণ করেন দোস্ত দুশমন ছবিটি (সাদা কালোয়, শোলে ছিল রঙিন)। বাংলাদেশের বক্স অফিসে যা সুপারহিট হয়। এতে শোলের ভিলেন আমজাদ খানের অনুরূপ চরিত্রে অভিনয় করে জসিম ব্যাপক প্রশংসা পান। আর অমিতাভের চরিত্রে অভিনয় করেন সোহেল রানা এবং ধর্মেন্দ্রর চরিত্রে ওয়াসিম। একই সঙ্গে হেমা মালিনির চরিত্র অভিনয় করেন শাবানা আর জয়া ভাদুরির চরিত্রে সুচরিতা।  </p> <p><span style=\"color:#B22222\"><em><strong>আরো পড়ুন  </strong></em></span><a href=\"http://www.kalerkantho.com/online/entertainment/2018/01/13/588946\">বিদ্যার কী হলো...</a></p> <p>দোস্ত দুশমন নিয়ে দেওয়ান নজরুলকেও নকলবাজির দায়ে চিত্র সমালোচকদের থেকে প্রচুর গালমন্দ শুনতে হয়েছিল তখনকার দিনে। যদিও ছবির শুরুতে লেখা ছিল ‘দুটি বিদেশি কাহিনীর ছায়া অবলম্বনে’। তবে এখনকার অনেকেই স্বীকার যান যে, নকল যদি নকলের মতো হয় তবে তা গ্রহণীয় নয়, আদরণীয়ও হয়ে ওঠে। বাংলাদেশি দোস্ত দুশনমন আর ভারতীয় শোলের ক্ষেত্রে তাই ঘটেছিল সম্ভবত। আর তখনকার প্রাপ্য সুযোগ-সুবিধা আর কারিগরী অবস্থার মূল্যায়নে দোস্ত দুশমন খারাপ কোনো নির্মাণ ছিল না- এটাও এখন মানেন অনেকেই। এখন আমাদের সেই ধরনের মনমানসিকতার পরিচালক-প্রযোজকরা এগিয়ে এলেও কিছু ভাল বাণিজ্যিক ছবির দেখা পাওয়া যেত বলে মনে করেন অনেকে।</p> <p> </p>