<p>আমাদের প্রতিদিনের খাদ্যতালিকার অন্যতম উপাদান চিনি। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা অনেকেই চিনিকে শরীরের জন্য নীরব ঘাতক বলে থাকেন। অতিরিক্ত চিনি বা চিনিজাতীয় খাবার খেলে হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, মস্তিষ্কের রোগ, স্থূলতা, ইত্যাদি রোগের আশঙ্কাও বেড়ে যায়। এছাড়া বর্তমানে বাজারে চিনির বিকল্প অনেক ধরনের ট্যবলেট বা বিকল্প উপাদানও পাওয়া যায়। তবে চিনির বিকল্প হিসেবে রাসায়নিক উপাদান দিয়ে তৈরি কৃত্রিম মিষ্টি ট্যাবলেটও যে একেবারে স্বাস্থ্যসম্মত, তা কিন্তু নয়। এক্ষেত্রে বিকল্প হিসেবে মিষ্টিজাতীয় কিছু প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করাই ভালো।</p> <p>খেজুর <br /> খেজুরের খাদ্য উপাদানের সিংহভাগই চিনি। ফল হিসেবে খেজুর খুবই স্বাস্থ্যকর এবং এটি ডায়াবেটিস বা অন্য কোনো দীর্ঘমেয়াদী রোগে আক্রান্তদের জন্য ক্ষতিকরও নয়। তাই চিনির বিকল্প হিসেবে খেজুরকে শুকিয়ে গুঁড়ো করে অথবা সিরাপ তৈরি করে যে কোনো খাবারের সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে।</p> <p>নারিকেল<br /> চিনির বিকল্প হিসেবে নারিকেল বা নারিকেলের গুঁড়ার চিনি গ্রামেগঞ্জে এখনো প্রচলিত। এটিও বেশ স্বাস্থ্যকর একটি খাবার। যদিও এটিকে সরাসরি চা কিংবা কফিতে ব্যবহার করা যায় না। তবে অন্যান্য মিষ্টি খাবারের সঙ্গে এটি অনায়সেই ব্যবহার করা চলে। এছাড়াও নারিকেলের ফুল থেকে তৈরি চিনিতে থাকে প্রচুর মিনারেল। এই চিনি ডায়বেটিস রোগীরাও কম পরিমাণে খেতে পারেন। তবে এই বিশেষ চিনি বানানো ব্যয়বহুল।</p> <p>আখের গুড় <br /> আখ থেকে তৈরি চিনি শরীরের জন্য ক্ষতিকর হলেও আখের গুড় কিন্তু চিনির উত্তম বিকল্প। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, চা অথবা কফির সঙ্গে এক টুকরো গুড় আপনার স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী এবং এটি আপনার রক্ত সঞ্চালনকে স্বাভাবিক রাখে।</p> <p>মধু <br /> মিষ্টির অভাব পূরণে চিনির সর্বোৎকৃষ্ট বিকল্প ধরা হয় মধুকে। এক কাপ চা অথবা কফিতে এক চামচ সাদা চিনির চেয়ে এক চামচ মধু অনেক উপকারী। মধু যে কেবল স্বাস্থ্যের জন্যেই ভালো তা নয়, এটি আপনাকে ওজন কমাতেও সাহায্য করবে।</p> <p>ফলের রস<br /> কলা, আম, স্ট্রবেরি, মিষ্টি আপেল, কাঁঠাল, ডালিম, তরমুজ, পেঁপে ও আনারসে রয়েছে প্রচুর প্রাকৃতিক চিনি। খাবারের সঙ্গে মিষ্টান্ন হিসেবে এসব ফলের জুস খেতে পারেন। এছাড়াও যে কোনো মিষ্টি খাবার প্রস্তুতের জন্যও এগুলো ব্যবহার করা যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে ফলের রস চিনি ব্যবহার করে তৈরি করা যে কোনো খাবারের চেয়ে অধিক স্বাস্থ্যকর।</p> <p>কিশমিশ<br /> শুকনো আঙুর বা কিশমিশও চিনির বিকল্প হিসেবে বহু খাবারে ব্যবহার করা যায়। তবে অতিরিক্ত কিশমিশ ব্যবহার করা উচিত নয়।</p> <p>স্টেভিয়া<br /> চিনির বিকল্প হিসেবে সম্প্রতি আবিষ্কৃত সবচাইতে কার্যকর প্রাকৃতিক উপাদান হচ্ছে 'স্টেভিয়া' নামে এক ধরনের সবুজ উদ্ভিদ। এ উদ্ভিদটি চিনির চেয়ে প্রায় ২৫০-৩০০ গুণ বেশি মিষ্টি। আবার এতে কোন ক্যালরি ও কার্বোহাইড্রেড না থাকায় এর কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও নেই। ফলে ডায়াবেটিস রোগীরাও নিশ্চিন্তে এটা দিয়ে তৈরি খাবার খেতে পারেন। বর্তমানে পুরো পৃথিবীজুড়ে স্টেভিয়ার নির্যাস এর ব্যবহার অত্যন্ত জনপ্রিয়।</p> <p>জাইলিটল<br /> এটাও এক ধরনের প্রাকৃতিক চিনি, যা পাওয়া যায় বিট, বেরি এবং ভুট্টাতে। জাইলিটল প্রায় চিনির মতোই মিষ্টি। এতে স্বল্প পরিমাণে ক্যালরি এবং গ্লাইসেমিক ইনডেক্স থাকে, যা শরীরকে চিনির ক্ষতিকর প্রভাব থেকে মুক্ত রাখে। </p>
