ঢাকা, রবিবার ২০ জুলাই ২০২৫
৫ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৪ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, রবিবার ২০ জুলাই ২০২৫
৫ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৪ মহররম ১৪৪৭

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতে মেয়েরা কেন পিছিয়ে?

কালের কণ্ঠ অনলাইন
কালের কণ্ঠ অনলাইন
শেয়ার
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতে মেয়েরা কেন পিছিয়ে?

ঢাকার কারওয়ানবাজার সফটওয়ার টেকনোলজি পার্কে। বহুতল এই ভবনে অন্তত ১৬ টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে যারা নানা ধরণের তথ্য ও প্রযুক্তিগত সেবা দিচ্ছে।

একটি কল সেন্টারে গ্রাহকদের সেবা দিতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন এখানকার কর্মীরা। এই কল সেন্টারে ৫ মাস হলো কাজ করছেন নাদিয়া।

তবে কল সেন্টারের চেয়ে প্রোগ্রাম ডিজাইনিং এ তার আগ্রহ বেশি।

তিনি বলছিলেন "একটা পুরো প্রোগ্রাম ডিজাইন আমি করতে পারি। কিন্তু এখানে মনে করা হয় কল সেন্টারেই মেয়েরা ভালো করবে। আমি আশা,বিশ্বাস একদিন প্রোগ্রাম ডিজাইন করবো যেটা সবায় অ্যাপ্রুভ করবে"।

তথ্য -যোগাযোগ ও প্রযুক্তি খাতে কল সেন্টার মাত্র একটি অংশ। বিশাল এই খাতে নানা ধরণের কাজ হয়।

যেমন প্রডাক্ট ডেভলপমেন্ট ও সার্ভিস রিলেটেড । প্রডাক্টের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে সফটওয়্যার ডেভলপমেন্ট, ওয়েব অ্যাপলিকেশন, মোবাইল অ্যাপলিকেশন,গেম ডেভলপমেন্ট , রোবোটিক্স ইত্যাদি।

শুনতে অনেকটা খটোমটো হলেও এর উপর এখন নির্ভর করে একটি দেশের উন্নয়নের মান। বাংলাদেশ সাম্প্রতিক বছর গুলোতে আইটি খাতে নানা ধরণের কাজ করছে।

তবে সেখানে পুরুষদের চেয়ে নারীদের সংখ্যা অনেক কম। বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ বলছে ১২ শতাংশ মেয়ে কাজ করছে এখন।

আইসিটি প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন বেসিস বলছে এই সংখ্যা ১০ শতাংশ।

আর বেসরকারি একটি আইটি প্রতিষ্ঠান প্রেনিউর ল্যাব- তাদের গবেষণায় বলছে এর সংখ্যা আরো কম- ২০১৭ সালের মার্চ পর্যন্ত এই সংখ্যা ৮.৭০%।

প্রশ্ন উঠছে বিশাল একটা সম্ভাবনাময় উপার্জন খাতে মেয়েরা এত কম সংখ্যায় কাজ করছে কেন?

রাবেয়া, কাজ করছেন একটি আইটি কোম্পানিতে। বিপিও বা বিজনেস প্রসেস আউটসোর্সসিং তার মূল কাজ। প্রশ্ন করলাম সফটওয়্যার ডেভলপমেন্ট, ওয়েব অ্যাপলিকেশনে কাজ করছেন না?

"এখানে একটা ধারণা আছে মেয়েরা বিপিও মানে কল সেন্টার, ব্যাক অফিস ওয়ার্ক এসবে ভালো করবে তাদের নরম স্বভাবের কারণে। কিন্তু সফটওয়্যার ডেভলপমেন্ট, ওয়েব অ্যাপলিকেশনে মনে করে ছেলেদের কাজ। একটা মাইন্ড সেট হয়ে গেছে, মনে করে এটা ওরাই ভালো পারবে। ফলে বড় সংখ্যার মেয়েরা এই জায়গায় আসতে পারে না" বলছিলেন তিনি।

রাবেয়ার কথা সত্যি হলে ধরে নিতে হয় আইসিটি খাতে নিয়োগের ক্ষেত্রে নিয়োগ-দাতাদের প্রথম পছন্দ এখন ছেলে। প্রায় ৯০ শতাংশ পুরুষ কাজ করা এই সেক্টরে নিয়োগ-দাতারা, একজনকে নিয়োগের সময় আসলে কোন দিক গুলোর কথা চিন্তা করেন?

ঢাকার বনানীতে অবস্থিত, চ্যাম্পস২১ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার রাসেল টি আহমেদ বলছিলেন "সময় এবং যোগ্যতা। অর্থাৎ সময় কতটা দিতে পারবে এবং স্কিল্ড কিনা। মেয়ে -ছেলে আলাদা করে দেখার কিছু নেই। কিন্তু ইন্টারভিউ বোর্ডে দেখা যায় একটা মেয়ে অত্যন্ত স্কিল্ড কিন্তু বলছে বিকেল ৫টার পর কাজ করতে পারবে না। এখন এই সেক্টরে কাজের কোন টাইম ফ্রেম নেই। একটা সফটওয়্যার সলিউসনে আপনার ১২/১৩ ঘণ্টা লাগতে পারে। আবার ইউরোপ, আমেরিকার সাথে আমার রাত দিনের পার্থক্য" মি. আহমেদের প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে ১০% নারী কাজ করছেন।

বাংলাদেশে বর্তমানে স্কুল পর্যায়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণী থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত কম্পিউটার শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

সরকারি,বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে রয়েছে আইটি বিষয়। প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে উভয় ভাবে। মেয়েরা সেখানে পড়ছেন এবং প্রশিক্ষণও নিচ্ছেন। তবে কর্মক্ষেত্রে কেন পিছিয়ে?

মোহাম্মদপুরে আমার গন্তব্য উইমেন ইন ডিজিটাল নামে একটি আইটি অফিস।

অফিসটিতে মোট ১৮ জন মেয়ে কাজ করছেন। কেউ করছেন অফিসে বসে কেউ নিজের বাসা থেকে।

উইমেন ইন ডিজিটাল এর প্রধান আছিয়া নীলা বলছিলেন তিনি যখন একটি প্রতিষ্ঠানে কাজ করতেন সেখানে তিনি কিভাবে বৈষম্যের শিকার হয়েছেন।

"একটা পর্যায়ে দেখা গেল প্রত্যেকটা প্রজেক্টের টিম লিডার আমি। সফটওয়্যার ডেভেলপ করা থেকে শুরু করে মার্কেটিং পর্যন্ত। কিন্তু কোথাও আমার নাম যাচ্ছে না। আবার বছরের পর বছর আমার পদ,বেতন এক। একদিন মিটিংএ আমার প্রমোশনের কথাটা বললাম কিন্তু কেও সদুত্তর দিতে পারলো না"।

দীর্ঘ দিন কাজ করে মেধার স্বীকৃতি না পেয়ে তিনি নিজেই একটি প্রতিষ্ঠান শুরু করেন। এবং সেখানে শুধু মেয়েদেরকেই নেন। কারণ চাকরি-দাতা হিসেবে তিনি এখন মনে করেন মেয়েদের মেধা,যোগ্যতা কোন অংশেই ছেলেদের চেয়ে কম নয়।

অন্যান্য দেশেও আইসিটি খাতে মেয়েরা পিছিয়ে
ইন্ডিয়া ডাটাকোয়েস্ট বেস্ট অ্যাম্পয়লার সার্ভে ২০১২ বলছে পাশের দেশ ভারত যারা তথ্য-প্রযুক্তিতে অনেক এগিয়েছে তাদের দেশে এই সংখ্যা শতকরা ২২%।

আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জনসংখ্যা ব্যুরোর ২০১৪ রিপোর্ট বলছে তথ্য প্রযুক্তির হাব বলা হয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালিতে সেখানে মাত্র ৩০% মেয়ে।

তথ্য প্রযুক্তি খাতে গ্রাফিক্স ডিজাইন, ই-কমার্স, ডিজিটাল মার্কেটিং, ডাটা সায়েন্স, বিগডাটা, আইওটি, টেস্টিং, ডাটা এন্ট্রি, ই-কমার্স প্রোডাক্ট এন্ট্রি প্রভৃতি নিয়ে কাজ হয়।

বাংলাদেশে একটি সফটওয়্যার ডেভলপমেন্ট কোম্পানি দোহা টেক নিউ মিডিয়া। প্রতিষ্ঠানটিতেও কাজ করেন ১০ থেকে ১২% নারী। প্রতিষ্ঠান চেয়ারম্যান লুনা শাসুদ্দোহা কাছে জানতে চেয়েছিলাম কেন মেয়েরা এক্ষেত্রে বেশি কাজ পাচ্ছে না?

তিনি বলছিলেন "আমি যখন একটা মেয়েকে নেয় তখন দেখা যাচ্ছে স্বামীর চাকরীর ট্রান্সফারের সাথে সে চলে যাচ্ছে অর্থাৎ পরিবারটা তার কাছে মুখ্য। আমি তিনটা মেয়েকে নিয়েছি যারা নেয়ার পর বাইরে পিএইচডি করতে চলে গেছে।সেখানে আমার কোম্পানি সাফার করছে। তবে বেশির ভাগ থাকে না সামাজিক কারণে।আমরা যেহেতু একটু স্পেসেফিক এরিয়াতে কাজ করি সেখানে উচ্চ লেভেলে মেয়ে কম পাওয়া যায় না। আমার একটা প্রজেক্ট আছে যেখানে ২৪/৭ কাজ চলে সেখানে আমি মেয়েদের নিতে পারিনা তাদের সামাজিক ইস্যু এবং নিরাপত্তার কথাটা মাথায় রাখতে হয় আমাকেই"।

তথ্য-প্রযুক্তি খাকে কেউ কেউ ফ্রিল্যান্সিং এ কাজ করে আর কেউ কেউ ইন-হাউজে কাজ করে।

যেখানে বাসায় বসেও কাজ করার সুযোগ রয়েছে সেখানে কি বাড়তি সুবিধা এনে দিচ্ছে না মেয়েদের?

বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কল সেন্টার এন্ড আউটসোর্সিং এর সেক্রেটারি জেনারেল তৌহিদ হোসেন বলছিলেন আমাদের এখন উৎসাহ দেয়া হচ্ছে অন্তত ৩০ শতাংশ নারী কর্মী রাখার জন্য। কিন্তু চাইলেও আমরা পারছি না।

মি. হোসেন বলছিলেন "কল সেন্টারে মেয়েরা কাজ করলেও সেটাকে মূল তথ্য-প্রযুক্তি খাত মনে করে না অনেকে। হার্ডওয়ার,সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট বা অন্য কাজ যেগুলো সেখানে মেয়েরা যে কাজ করতে পারে সেটা প্রচারণার অভাব আছে। আমরা বিদেশি ফান্ড নিয়ে যখন কাজ করি তখন আমাদের বলা হয় ৩০% করতে। কিন্তু সব মিলিয়ে আমরাও পাই না। তাই ছেলেদেরকেই নিতে হয়"।

বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের 'দিন বদলের সনদ'-এ ২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ করার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। কিন্তু মাত্র ১০% মেয়ে যদি এই খাতে কাজ করে তাহলে দিন বদল কিভাবে সম্ভব?

আমি এসেছি আগারগাওয়ে বাংলাদেশে তথ্য ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের অফিসে।

মেয়েদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে বা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য কি করছেন তারা। সচিব সুবির কিশোর চৌধুরিকে জিজ্ঞেস করেছিলাম।

তিনি বলছিলেন "প্রথমেই স্বীকার করছি মেয়েরা কম এই কথাটা। এখন সরকার যেটা করছে লার্নিং এন্ড আর্নিং প্রকল্প থেকে ইতোমধ্যে শুধু ইউনিয়ন লেভেলে ২০ হাজার নারীকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। এছাড়া জুলাই থেকে শী পাওয়ার নামে এক প্রকল্পে ২১ টি জেলায় ১০ হাজার ৫০০ নারীকে আইসিটি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে"।

শুরুতে নাদিয়ার কথা বলছিলাম, তিনি কাজ করতে চান সফটওয়্যার ডিজাইনে যেটা কিনা তথ্যপ্রযুক্তির মুল কাজ গুলোর একটিকে ধরা হয়।
কিন্তু তিনি বলছিলেন সুযোগের অভাবে কল সেন্টারে কাজ করছেন তিনি।

বলছিলেন মনের মত কাজ না পেলে এই সেক্টর পুরোপুরি ত্যাগ করবেন তিনি।

তবে সার্বিক ভাবে নারীদের পিছিয়ে থাকার কারণ অনেকটা সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি আবার কিছু সময় মেধা ও যোগ্যতা থাকলেও তারা তথ্য-প্রযুক্তি খাত থেকে পেশা পরিবর্তন করে অন্য স্থানে যাচ্ছেন।

-বিবিসি বাংলা

মন্তব্য

ফেসবুক ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য চুরি, গোপনে সমঝোতায় পৌঁছালেন জাকারবার্গ

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ফেসবুক ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য চুরি, গোপনে সমঝোতায় পৌঁছালেন জাকারবার্গ
মেটার প্রধান নির্বাহী মার্ক জাকারবার্গ। ছবি : এএফপি

ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষায় অবহেলার দায়ে দায়ের করা আট বিলিয়ন ডলারের ক্ষতিপূরণ মামলা নিয়ে গোপন সমঝোতায় পৌঁছেছেন মার্ক জাকারবার্গ ও মেটা প্ল্যাটফরমের বর্তমান ও সাবেক পরিচালকরা। বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের ডেলাওয়ার চ্যান্সারি কোর্টে মামলার শুনানির দ্বিতীয় দিনে এ তথ্য জানান বাদীপক্ষের আইনজীবী।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, সমঝোতার শর্তগুলো আদালতে প্রকাশ করা হয়নি। এমনকি বিবাদীপক্ষের আইনজীবীরাও এই বিষয়ে মুখ খোলেননি।

শুনানি শুরুর ঠিক আগে হঠাৎ বিচারক ক্যাথলিন ম্যাককরমিক মামলাটি মুলতবি ঘোষণা করেন এবং উভয় পক্ষকে অভিনন্দন জানান।

বাদীপক্ষের আইনজীবী স্যাম ক্লসিক জানিয়েছেন, সমঝোতায় পৌঁছাতে তাদের খুব বেশি সময় লাগেনি। ওই দিনই আদালতে সাক্ষ্য দেওয়ার কথা ছিল মেটার পরিচালনা পর্ষদের সদস্য ও ধনকুবের বিনিয়োগকারী মার্ক অ্যান্ড্রিসেনের। 

এই মামলায় মূল অভিযুক্ত ছিলেন মেটার প্রধান নির্বাহী মার্ক জাকারবার্গ, সাবেক প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা শেরিল স্যান্ডবার্গসহ বর্তমান ও সাবেক মিলিয়ে মোট ১১ জন কর্মকর্তা।

বাদী শেয়ারহোল্ডারদের অভিযোগ, এসব ব্যক্তি কোম্পানির গোপনীয়তা লঙ্ঘনের দায়ে ফেসবুককে বিপুল অঙ্কের জরিমানার মুখে ফেলেছেন। ফলে তাদের ব্যক্তিগত সম্পদ থেকেই সেই ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। যদিও অভিযুক্তরা অভিযোগগুলো ‘অযৌক্তিক’ বলে দাবি করেছেন।

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ট্রেড কমিশন (এফটিসি) ফেসবুককে পাঁচ বিলিয়ন ডলার জরিমানা করে।

২০১২ সালে ব্যবহারকারীদের তথ্য সুরক্ষাসংক্রান্ত যে চুক্তি হয়েছিল, তা লঙ্ঘনের অভিযোগেই এই জরিমানা। এই মামলায় মেটা করপোরেশনকে সরাসরি আসামি করা হয়নি।

মামলার বিষয়ে মেটা কোনো মন্তব্য করেনি। এমনকি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেননি বিবাদীপক্ষের আইনজীবীরাও।

ডিজিটাল কনটেন্ট নেক্সটের প্রধান জেসন কিন মনে করেন, এই সমঝোতা হয়তো সংশ্লিষ্টদের কিছুটা স্বস্তি দেবে, কিন্তু জনস্বার্থে দায় স্বীকার করার সুযোগ হারাল।

তার মতে, মামলাটি চালিয়ে নেওয়া হলে ফেসবুকের ভেতরের অনেক অজানা তথ্য প্রকাশ্যে আসত।

মামলার পরবর্তী পর্যায়ে সাক্ষ্য দেওয়ার কথা ছিল জাকারবার্গের (সোমবার) ও স্যান্ডবার্গের (বুধবার)। এ ছাড়া সাবেক বোর্ড সদস্য পিটার থিল ও রিড হেস্টিংসেরও সাক্ষ্য দেওয়ার সম্ভাবনা ছিল।

বাদীপক্ষের অভিযোগ, মেটার পরিচালনা পর্ষদ ২০১২ সালের এফটিসি চুক্তির শর্ত মানা হচ্ছে কি না, তা পর্যবেক্ষণে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে। এমনকি জাকারবার্গ ও স্যান্ডবার্গের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা ফেসবুককে পরিকল্পিতভাবে একটি ‘অবৈধ তথ্য সংগ্রাহক প্ল্যাটফরমে’ পরিণত করেছেন।

২০১৬ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় ব্রিটিশ পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা কোটি কোটি ফেসবুক ব্যবহারকারীর তথ্য হাতিয়ে নেয়। এরপরই এই কেলেঙ্কারির সূত্র ধরে মামলার সূত্রপাত হয়।

গতকালের শুনানিতে বাদীপক্ষের একজন বিশেষজ্ঞ বলেন, ফেসবুকের গোপনীয়তা নীতিতে গুরুতর ঘাটতি রয়েছে। যদিও তিনি নিশ্চিত করে বলতে পারেননি, প্রতিষ্ঠানটি ২০১২ সালের চুক্তি ভেঙেছে কি না।

ফেসবুক জানিয়েছে, ২০১৯ সালের পর থেকে ব্যবহারকারীদের গোপনীয়তা রক্ষায় তারা বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে।

তবে প্রযুক্তি বিশ্লেষক জেসন কিন মনে করেন, ফেসবুক কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা কাণ্ডকে ‘খারাপ কিছু ব্যক্তির কাজ’ হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করেছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, পুরো প্রতিষ্ঠানটির নজরদারিমূলক ব্যাবসায়িক মডেলই ভেঙে পড়েছে এবং সেটি এখনো সংশোধিত হয়নি।

তার মতে, মামলাটি অব্যাহত থাকলে আদালতে হয়তো ফেসবুকের আসল চেহারাটা দেখা যেত—কিন্তু সেই সুযোগটা হারিয়ে গেল। 

মন্তব্য

ব্রিস্টলে চালু যুক্তরাজ্যের শক্তিশালী সুপার কম্পিউটার ‘ইসামবার্ড-এআই’

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ব্রিস্টলে চালু যুক্তরাজ্যের শক্তিশালী সুপার কম্পিউটার ‘ইসামবার্ড-এআই’
সংগৃহীত ছবি

ব্রিস্টলে আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হলো যুক্তরাজ্যের অত্যাধুনিক সুপার কম্পিউটার ‘ইসামবার্ড-এআই’। দেশটির প্রযুক্তিসচিব পিটার কাইল এটি চালু করেন সরকারের নতুন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা পরিকল্পনার অংশ হিসেবে।

এই কম্পিউটারটি কেমব্রিজের ‘ডন’ নামের আরেকটি সুপার কম্পিউটারের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যুক্তরাজ্যের পাবলিক এআই শক্তিকে আরো উন্নত করবে। এর লক্ষ্য—ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের অপেক্ষমাণ তালিকা কমানো, জলবায়ু পরিবর্তন রোধে নতুন উপায় খোঁজা, ওষুধ উদ্ভাবনসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজে ব্যবহার করা।

ইসামবার্ড-এআই ইতিমধ্যে জানুয়ারিতে একটি ওষুধ গবেষণা প্রকল্পে ব্যবহার শুরু হয়। এখন এটি সম্পূর্ণরূপে চালু হওয়ায় আরো অনেক সরকারি প্রকল্পে ব্যবহার করা যাবে। এই মেশিনে রয়েছে ৫,৪০০-এরও বেশি এনভিডিয়া গ্রেস হপার সুপারচিপ। এটি হিউলেট-প্যাকার্ডের প্রযুক্তিতে তৈরি এবং সরকারি অর্থায়নে ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয় এটি নির্মাণ করেছে।

যুক্তরাজ্য সরকার জানিয়েছে, আগামী পাঁচ বছরে এ ধরনের সুপার কম্পিউটার ব্যবস্থার সক্ষমতা ২০ গুণ বাড়ানো হবে।

পাশাপাশি স্কটল্যান্ড ও ওয়েলসেও এআই উন্নয়নে বিশাল অঙ্কের বিনিয়োগ করা হবে। সরকার বলছে, ১০ লাখ শিক্ষার্থীকে এআই শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে এবং আরো ৭৫ লাখ মানুষকে এটি নিয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। বিশ্বজুড়ে এআই প্রতিযোগিতার মধ্যে যুক্তরাজ্য নিজেকে শুধু ব্যবহারকারী নয়, বরং উদ্ভাবক হিসেবেও গড়ে তুলতে চাইছে।

ইতিমধ্যেই ‘ইসামবার্ড-এআই’ বিশ্বের শীর্ষ ৫০০ সুপার কম্পিউটারের তালিকায় ১১তম স্থানে উঠে এসেছে।

সূত্র : বিবিসি

মন্তব্য

স্পেসএক্সের প্রতিনিধিদল ঢাকায় আসছে কাল

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
স্পেসএক্সের প্রতিনিধিদল ঢাকায় আসছে কাল

বিশ্বখ্যাত মহাকাশ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্সের সহযোগী প্রতিষ্ঠান স্টারলিংকের ব্যবসা পরিচালনা বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট লরেন ড্রেয়ারের নেতৃত্বে একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল আগামীকাল শুক্রবার (১৮ জুলাই) ঢাকায় আসছেন। প্রতিনিধিদলের অন্য সদস্য হলেন আন্তর্জাতিক কৌশল ও সরকারি সম্পর্ক পরিচালক রিচার্ড গ্রিফিথস।

বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়।

প্রতিনিধিদলটি বাংলাদেশ সফরে তথ্যপ্রযুক্তি ও যোগাযোগ অবকাঠামো উন্নয়নে স্টারলিংকের সম্ভাব্য বিনিয়োগ ও অংশীদারিত্বের দিকগুলো মূল্যায়ন করবে এবং সরকার ও নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেবে।

পাশাপাশি তারা বাংলাদেশে স্টারলিংকের অফিসিয়াল যাত্রা শুরুর ঘোষণা দেবে।

লরেন ড্রেয়ারের নেতৃত্বে আগত দলটি ব্যবসায়িক সম্ভাবনা যাচাই, নতুন প্রযুক্তির স্থানীয় বাস্তবায়ন এবং গ্রামীণ ও দুর্গম অঞ্চলে ইন্টারনেট পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগে বাংলাদেশকে একটি গুরুত্বপূর্ণ বাজার হিসেবে দেখছে।

স্পেসএক্স ও স্টারলিংকের এই সফর বাংলাদেশের ডিজিটাল ট্রান্সফর্মেশনের লক্ষ্য পূরণে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

আগামীকাল প্রতিনিধিদলটি প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে।

পরে হোটেল ইন্টার কন্টিনেন্টালে প্রেস কনফারেন্সে বক্তব্য রাখবে। রাতে ঢাকার হাতিরঝিলে অনুষ্ঠিত জুলাই পুনর্জাগরণ অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন এবং আগামী ১৯ জুলাই প্রতিনিধিদল দেশে ফিরে যাবেন।

মন্তব্য

তথ্য অধিকার নিয়ে নতুন অভিযোগের মুখে টিকটক

এএফপি
এএফপি
শেয়ার
তথ্য অধিকার নিয়ে নতুন অভিযোগের মুখে টিকটক
ফাইল ছবি : এএফপি

ইউরোপীয় ইউনিয়নের জেনারেল ডেটা প্রটেকশন রেগুলেশনের (জিডিপিআর) বিধি-নিষেধ না মানার অভিযোগে অনলাইন গোপনীয়তা নিয়ে কাজ করা কর্মীরা বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম জায়ান্ট টিকটক ও আরো চীনা মালিকানাধীন দুই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নতুন অভিযোগ করেছেন। বিধি-নিষেধ অনুযায়ী একজন ব্যবহারকারী তার ব্যক্তিগত তথ্য কিভাবে প্রক্রিয়া করা হচ্ছে তা জানার অধিকার রাখেন। তবে প্রতিষ্ঠানগুলো এ বিধি-নিষেধ অনুসরণ করে নি বলে জানিয়েছে অভিযোগকারীরা। 

অস্ট্রিয়াভিত্তিক প্রখ্যাত গোপনীয়তা সংগঠন নোইব (নান অব ইওর বিজনেস) জানুয়ারিতেও এই তিনটি প্রতিষ্ঠানসহ ছয়টি চীনা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিল।

তাদের অভিযাগ ছিল—‘অবৈধভাবে’ ইউরোপীয় নাগরিকদের ব্যক্তিগত তথ্য চীনে পাঠানো হয়েছে।

নোইব জানিয়েছে, শেইন, টেমু ও শাওমি অভিযোগকারীদের বাড়তি তথ্য সরবরাহ করলেও টিকটক, আলিএক্সপ্রেস ও উইচ্যাট ইউরোপীয় ইউনিয়নের জিডিপিআর বিধি-নিষেধ লঙ্ঘন করেই চলেছে। টিকটকের বিরুদ্ধে গ্রিসে, আলিএক্সপ্রেসের বিরুদ্ধে বেলজিয়ামে ও উইচ্যাটের বিরুদ্ধে নেদারল্যান্ডসে ডেটা সুরক্ষা কর্তৃপক্ষের কাছে নতুন অভিযোগ করা হয়েছে। অভিযোগে তাদের ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য কিভাবে প্রক্রিয়া হচ্ছে তা জানানো ও জরিমানা করার নির্দেশ দেওয়ার কথা বলা হয়।

নোইব বলেছে, ‘এই তিনটি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানই ব্যক্তিগত তথ্য কিভাবে প্রক্রিয়া হচ্ছে সেই তথ্য প্রদানের অনুরোধ মানেনি। এতে করে ইউরোপীয় ব্যবহারকারীদের মৌলিক গোপনীয়তার অধিকার চর্চা ও তাদের ব্যক্তিগত ডেটা কিভাবে প্রক্রিয়া হচ্ছে তা জানার সুযোগ নেই। টিকটক অভিযোগকারীর তথ্যের শুধু কিছু অংশ এলোমেলো ভাবে সরবরাহ করেছে, যা বোঝা অসম্ভব।’

ইউরোপে তদন্ত শুরু হওয়ার পর গত সপ্তাহে বেইজিং দাবি করেছে, তারা কোনো প্রতিষ্ঠানকে অবৈধভাবে ব্যবহারকারীর তথ্য সংগ্রহ কিংবা সংরক্ষণের নির্দেশ দেয়নি।

ব্যক্তিগত ডেটা চীনে পাঠানোর দায়ে গত মে মাসে আয়ারল্যান্ডের ডেটা সুরক্ষা কমিশন টিকটককে ৫৩০ মিলিয়ন ইউরো জরিমানা করেছিল।

নোইব জিডিপিআর লঙ্ঘনের কারণে মেটা ও গুগলের মতো বহু মার্কিন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধেও মামলা করেছে। তারা বৃহস্পতিবার মন্তব্য করেছে, ‘চীনা অ্যাপগুলো মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলোর চেয়েও খারাপ।’

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ