<p>নার্স ও মিডওয়াইফ (ধাত্রী) নিয়োগের জন্য মুক্তিযোদ্ধা কোটা শিথিল করা হচ্ছে। চার হাজার সিনিয়র স্টাফ নার্স ও ৬০০ ধাত্রী নিয়োগ করার জন্য মুক্তিযোদ্ধা কোটা এককালীন শিথিল করার প্রস্তাব দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এ প্রস্তাব আজ সোমবার মন্ত্রিসভা বৈঠকে অনুমোদন করা হতে পারে। এসংক্রান্ত বিষয় মন্ত্রিসভা বৈঠকের আলোচ্যসূচিতে রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে তাঁর তেজগাঁওয়ের কার্যালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।</p> <p>কোটা নিয়ে বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন চলছে। গতকাল রবিবারও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী চাকরিপ্রার্থীরা কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন। এ অবস্থায় সিনিয়র স্টাফ নার্স ও ধাত্রী নিয়োগের জন্য এককালীন কোটা শিথিল করার বিষয়টি মন্ত্রিসভা বৈঠকের আলোচ্যসূচিতে রাখা হয়েছে। একজন মন্ত্রী কালের কণ্ঠকে বলেছেন, ‘সিনিয়র স্টাফ নার্স ও ধাত্রী নিয়োগের জন্য কোটা শিথিলের বিষয়টি যখন তোলা হবে তখন পুরো কোটা পদ্ধতি নিয়েই আলোচনা হতে পারে। চাকরিপ্রার্থীদের দাবি নিয়ে আন্দোলন আমাদেরও নজরে পড়েছে।’</p> <p>পাবলিক সার্ভিস কমিশনের বিভিন্ন নিয়োগে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা, ১০ শতাংশ নারী কোটা, ১০ শতাংশ জেলা কোটা ও ৫ শতাংশ ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী কোটা রয়েছে। জেলা, নারী ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী কোটার পদ পূরণে সংরক্ষণ করার কোনো বিধি-নিষেধ নেই। অর্থাৎ এসব পদে উপযুক্ত প্রার্থী না পাওয়া গেলে তা শূন্য রাখার বা সংরক্ষণ করার কোনো নিয়ম নেই। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধা কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে সেসব পদ শূন্য রাখার বা সংরক্ষণ করার সিদ্ধান্ত রয়েছে মন্ত্রিসভার। ২০১০ সালে মন্ত্রিসভা এ সিদ্ধান্ত নেয়। কয়েক বছর ধরে পাবলিক সার্ভিস কমিশন</p> <p>সরকারকে দফায় দফায় জানিয়েছে, মুক্তিযোদ্ধা কোটা সংরক্ষণের কারণে অনেক পদ শূন্য থাকছে। এ সংকট কারিগরি ও পেশাগত বিসিএসে প্রকট আকার ধারণ করেছে। সাধারণ বিসিএসেও অনেক পদ শূন্য থাকছে। এর আগে ৩৪তম বিসিএস ও ৩৫তম বিসিএসের জন্য কোটা শিথিল করা হয়েছিল। এমনকি গত বছর মুক্তিযোদ্ধা কোটা শিথিল করে প্রায় ১০ হাজার সিনিয়র স্টাফ নার্স নিয়োগ করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে তীব্র নার্স সংকট নিরসনের জন্য এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। এবারও দ্বিতীয় শ্রেণির চার হাজার সিনিয়র স্টাফ নার্সের সঙ্গে ৬০০ ধাত্রী নিয়োগ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে।</p> <p>সিনিয়র স্টাফ নার্স ও ধাত্রী পদের জন্য আবেদনের শেষ সময় ছিল ২০১৭ সালের ৩০ আগস্ট। নার্স পদে ১৯ হাজার ৯০০ এবং ধাত্রী পদে ৯২১টি আবেদন জমা পড়েছে। পদ দুটি দ্বিতীয় শ্রেণির কারিগরি ও পেশাগত পদ। সরকারের স্বাস্থ্যসেবার মান নিশ্চিত করার জন্য গত বছর পরীক্ষা পদ্ধতি শিথিল করা হয়েছিল। এ অবস্থায় অল্প সময়ের মধ্যে আরো চার হাজার নার্স ও ৬০০ ধাত্রী নিয়োগের জন্য কোটা শিথিলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছে পাবলিক সার্ভিস কমিশন।</p> <p>একজন সিনিয়র মন্ত্রী কালের কণ্ঠকে জানিয়েছেন, নার্স ও ধাত্রী নিয়োগের প্রস্তাব ছাড়াও বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ড আইন ও বস্ত্র আইনের খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিসভা বৈঠকের আলোচ্যসূচিতে রাখা হয়েছে। এ ছাড়া জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ আইন, শিশু (সংশোধন) আইন, জাতীয় হজ ও ওমরাহ নীতি এবং চলতি বছরের হজ প্যাকেজ অনুমোদনের বিষয়গুলোও আলোচ্যসূচিতে স্থান পেয়েছে।</p>