<p>‘মা লো মা’ তাঁদের পারিবারিক গান। দাদা খালেক দেওয়ানের গানটি কোক স্টুডিওর তৃতীয় সিজনে গেয়ে মাত করেছেন দুই ভাই—সাগর দেওয়ান ও আরিফ দেওয়ান। সাগর দেওয়ানের সঙ্গে কথা বলেছেন সুদীপ কুমার দীপ।</p> <p><strong>সারা দেশ এখন ‘মা লো মা’য় মজে আছে। কেমন লাগছে আপনার?</strong><br /> সত্যিই অসাধারণ অনুভূতি। এটি আমাদের পারিবারিক গান। আমার ছোট দাদা খালেক দেওয়ান নিজেই লিখেছেন, সুর করেছেন, গেয়েছেন। জন্মের পর থেকে শুনছি গানটি, কতবার যে গেয়েছি! এখন গানটি শুধু আমাদের নয়, পুরো বাংলা ভাষার মানুষের। সবাই শুনছেন, অনলাইনে শেয়ার করছেন। এই ভালো লাগাটা বর্ণনা করে শেষ করা যাবে না। কোক স্টুডিও কর্তৃপক্ষের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। তারা গানটি সিলেক্ট করেছে, পুরো বিশ্বের কাছে পৌঁছে দিয়েছে।</p> <p><strong>কোক স্টুডিওতে প্রস্তাব পাওয়ার ঘটনাটা বলবেন?</strong><br /> অর্ণব ভাইয়ের প্রথম সিজনের গান ‘চিলতে রোদ’ কাভার করেছিলাম। সেটি অনেকেই পছন্দ করেছিলেন। অর্ণব ভাইও ফেসবুকে শেয়ার করেছিলেন। একদিন তিনি আমাকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন। গিয়ে কথা বললাম, কোক স্টুডিওতে গাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলাম। প্রথম সিজনেই আমার গাওয়ার কথা ছিল। হয়ে ওঠেনি নানা জটিলতায়। পরের সিজনে রুনা লায়লা ম্যাডামের সঙ্গেও গান করার কথা ছিল। শিডিউল জটিলতায় সেটাও বাতিল হয়। শেষ পর্যন্ত তৃতীয় সিজনে এসে সুযোগ হলো।</p> <p><strong>বড় ভাই আরিফ দেওয়ানও তো যুক্ত হলেন আপনার সঙ্গে...</strong><br /> আগেই বলেছি, এটি আমাদের পারিবারিক গান। দাদা মারা যাওয়ার পর আরিফ ভাই গানটি বাঁচিয়ে রেখেছিলেন। গানটি কোক স্টুডিওতে সিলেক্ট হওয়ার পর আমি প্রীতম হাসান ভাইকে বলি আরিফ ভাইয়ের কথা। ১৫ বছর আরিফ ভাইয়ের কাছে গানের তালিম নিয়েছি। প্রীতম ভাই, অর্ণব ভাই ও গাউসুল আলম শাওন ভাই মিলে সিদ্ধান্ত নিলেন আরিফ ভাইকে সঙ্গে নেওয়ার। </p> <p><strong>এটি তো দেহতত্ত্বের গান। এ ধরনের গানে সাধারণত একতারা, দোতারা, হারমোনিয়াম, বাঁশির ব্যবহার করা হয়—মাটির একটা সুর থাকে। এখানে এসবের সঙ্গে ব্যবহার করা হয়েছে আধুনিক বাদ্যযন্ত্র। সঙ্গে আছে র‌্যাপ পার্টও। আপনার পরিবারের অন্য সদস্যরা গানটি কিভাবে নিয়েছে?</strong><br /> এটা আসলে সময়ের দাবি। এই ধরনের গানগুলো মাটি ও মানুষের। তবে নতুন প্রজন্মের কথাও ভাবতে হবে। এই প্রজন্মের কাছে দেহতত্ত্বের গান, ভাটিয়ালি-জারি-সারি গানগুলো পৌঁছে দিতে হলে অবশ্যই ফিউশনে যেতে হবে। প্রথম দিকে আমি প্রীতম ভাইকে বলেছিলাম ঢোল, বাঁশি, দোতারাকে প্রাধান্য দেওয়ার জন্য। পরে মনে হলো, এটা তো সত্তরের কিংবা আশির দশক নয়, ঊনবিংশ শতাব্দীও নয়। সময় অনুযায়ী মিউজিক না করলে কেউ শুনবে না। আমার পরিবারও কিন্তু গানটি দারুণ পছন্দ করেছে। তারা তো বংশপরম্পরায় গানটি শুনে আসছে, নতুন করে নতুন আয়োজনে শুনে তারা খুশিই হয়েছে।</p> <p><strong>কত দিন লাগল গানটি করতে?</strong><br /> পুরো ছয় মাস। আমরা প্রথমে মহড়া করেছি। তারপর মিউজিক নিয়ে অনেক দিন বসেছি। কোথায় কী করা যায়, কিভাবে শ্রোতাদের আকৃষ্ট করা যায়, সেটাও ভেবেছি। আলী হাসান ভাই যুক্ত হয়েছেন সেই ভাবনা থেকেই। ধৈর্যই সফলতার চাবিকাঠি, তা আরেকবার প্রমাণ করল ‘মা লো মা’।</p> <p><strong>কোক স্টুডিওতে আর কোনো গান করছেন?</strong><br /> এবারের সিজনে ১৩টি গান থাকার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত থাকবে ১১টি। ফলে এই সিজনে আমার গান থাকার আর সম্ভাবনা নেই। পরের সিজনে চেষ্টা করব। কারণ এই টিম আমার মনের আসন দখল করে নিয়েছে। চাইলেও আমি তাদের ছাড়তে পারব না।</p> <p><strong>অনেক দিন ধরেই তো গান করছেন। নতুন কী করছেন?</strong><br /> ‘কুমাইরা পোকা’ ও ‘শ্যাম কালো’ নামের দুটি গান করেছি। এর মধ্যে ‘কুমাইরা পোকা’ আসবে আগে। আমার ইউটিউব চ্যানেল থেকেই গান দুটি প্রকাশ করব।</p> <p><strong>প্লেব্যাকে সুযোগ পেলে করবেন?</strong><br /> অবশ্যই। অনেক দিন ধরেই চলচ্চিত্রে গাওয়ার স্বপ্ন পুষে রেখেছি। অনেকের সঙ্গে কথাও হচ্ছে। হয়তো খুব শিগগির ডাক পাব। চলচ্চিত্রের গানে নিজেকে প্রমাণ করার সুযোগও পাব। </p>