<p>হামিন আহমেদ। বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় সংগীত ব্যক্তিত্ব। লিজেন্ডারি মিউজিক্যাল ব্যান্ড 'মাইলস'-এর প্রতিষ্ঠাতা-লিড গিটারিস্ট। সেই সাথে বাংলাদেশ মিউজিক্যাল ব্যান্ড অ্যাসোসিয়েশন (বামবা)-এর অন্যতম প্রধান ব্যক্তি। সংগীতশিল্পীদের ন্যায্য অধিকার আদায়ে দীর্ঘদিন ধরে নিরলস শ্রম দিয়ে যাচ্ছেন। সম্প্রতি কালের কণ্ঠে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন নিয়ে নিজের মতামত ব্যক্ত করেন সোশাল মিডিয়ায়। ইংরেজিতে লেখা সেই বক্তব্যটির ভাবানুবাদ কালের কণ্ঠের পাঠকদের জন্য প্রকাশ করা হলো।</p> <p>এভাবেই সৃজনশীল শিল্পী ও মিউজিশিয়ানদের কাছ থেকে তাঁদের আয় এবং আয় করার অধিকারকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়। সব শিল্পীকে 'দুঃস্থ' রাখার এক ভয়ংকর এজেন্ডা নিয়েই যেন মাঠে নেমেছে তথাকথিত অডিও দোকানদার টার্নড রেকর্ড লেবেল, সাথে রয়েছে তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়নকারী কিছু মাল্টিন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশনস ব্যবসায়ী। আর শিল্পীদের সাথে এ ধরনের আচরণ যেন তাদের সহজাত। কেননা, তারা জেনে গেছেন, প্রত্যেক শিল্পীই চান, সৃষ্টির মাধ্যমে নিজের ভবিষ্যত বদলাতে। আর এই বিষয়টি নিয়েই খেলছেন ওই সংগীত ব্যবসায়ীরা।</p> <p>সর্বসাম্প্রতিক সময়ে কিছু সরকারি কর্মকর্তাদের দেখা যাচ্ছে এসব শিল্পীদের পক্ষে দাঁড়াতে, এবং তাঁরা চাইছেন ওঁরা যাতে এসব ব্যবসায়ী নামক দস্যুদের হাত থেকে বাঁচতে পারেন। ওই কর্মকর্তারা চাইছেন শিল্পীদের পক্ষে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে। শুধু তা-ই নয়, এখন এই মুহূর্তে সৃষ্টিশীল শিল্পীদের জন্য, তাঁদের পক্ষেই তৈরি হচ্ছে আইপিআর আইন (ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি ল')। আমরা আশাবাদী, এই আইনের ওপর ভিত্তি করে যেকোনো শিল্পী তাঁর ন্যায্য অধিকার পাবেন।</p> <p>আর এভাবেই এবং অবশ্যই তথাকথিত এসব সংগীত ব্যবসায়ীদের থামাতে হবে এবং আমাদের কাউকে না-কাউকেই এ কাজটি করতে হবে।</p> <p>এবার আসি মূল প্রসঙ্গে। এই গানটি একটি ভীষণ ভীষণ এবং ভীষণ হিট গান। আজ পর্যন্ত ডিজিটাল ডোমেইনে এটিই বাংলাদেশের জনপ্রিয়তম গান। আর তাই এর গায়ক শিল্পী অবশ্যই এর জন্য যশ, খ্যাতি এবং অর্থ পাবার যোগ্যতা রাখেন। তবে কী হচ্ছে, তিনি কী পাচ্ছেন সেটা?</p> <p>যে ছেলেটিকে নিয়ে আলোচনা, সে এসেছে গ্রাম থেকে, সহজ-সরল। সে জানে না তাঁর অধিকার সম্পর্কে, তাই তাঁকে ঠকানো হয়েছে। ও তো ব্যবসা বোঝে না, জানে না কিসে কার কতটা লাভ।</p> <p>আর এটা তো ওঁর জানার কথাও না। সে মিউজিক করবে, যা তাঁর করার কথা আর আপনারা যারা আছেন তারা ওর পক্ষ থেকে একটি 'ফেয়ার বিজনেস' করবেন এবং সেটা অবশ্যই তাঁর প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শনপূর্বক।</p> <p>কিন্তু আপনি সেটা করেননি। কেননা, একবার দস্যু যে, সব সময় দস্যু সে।</p> <p>একজন সংগীতসংশ্লিষ্ট হিসেবে আমি মনে করি এই গানটি ডিজিটাল ডোমেইনে বাংলা গানের দ্বার উন্মুক্ত করে দিয়েছে। আর তাই এখনই সময় এই সুযোগসন্ধানী সংগীত ব্যবসায়ী আর সংগীত দস্যুদের এক সাথে প্রতিরোধ করার। আর এভাবেই নিজেদের অধিকার আমাদের নিজেদেরই আদায় করে নিতে হবে।</p> <p>এবার অন্যভাবে ভাবার সময় এসেছে। জেগে উঠুন, খুব দেরি হয়ে যাবার আগেই।</p> <p>উল্লেখ্য, গত ১০ জুলাই কালের কণ্ঠের অনলাইন সংস্করণে <a href=\"http://www.kalerkantho.com/online/entertainment/2018/07/10/656388\"><strong>'অপরাধী গানের ১০ কোটি ভিউ, আরমান পেয়েছেন মাত্র ৫০ হাজার টাকা</strong></a>' শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। যেখানে গানটির পরিবেশক ও প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ঈগল মিউজিকের কর্ণধার কচি আহমেদ সরাসরি বলেছেন, তারা এককালীন গানটি ক্রয় করেছেন। কিন্তু 'এককালীন ক্রয়' শব্দটি কপিরাইট আইনের পরিপন্থী।</p>