<p>বগুড়ার নন্দীগ্রামে মসজিদের দানবাক্স থেকে টাকা চুরির অপবাদে দুই যুবককে গাছে বেঁধে নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। নির্যাতনের সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। গত রবিবার (৩১ মার্চ) রাতে নন্দীগ্রাম পৌরসভার নামুইট তিনমাথা বাজারে এ ঘটনা ঘটে। </p> <p>নির্যাতনের শিকার দুই যুবক উপজেলার তাঁরাটিয়া গ্রামের আব্দুস সালামের ছেলে মুর্শিদুল (১৮) ও ভাটরা গ্রামের মিজানুর রহমানের ছেলে সুমন আহম্মেদ (১৯)।</p> <p>এ ঘটনায় গত রবিবার রাতে নির্যাতনের শিকার সুমনের বাবা মিজানুর রহমান বাদী হয়ে আটজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। মামলায় পুলিশ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তাররা হলেন নন্দীগ্রাম পৌরসভার নামুইট গ্রামের মাতব্বর নজরুল ইসলাম ও কাচু প্রামানিক।</p> <p>স্থানীয়রা জানায়, নামুইট তিনমাথা বাজারের মসজিদের দানবাক্স থেকে টাকা চুরির অভিযোগ তুলে দুই যুবককে ধরে আনেন নামুইট গ্রামের মাতব্বর নজরুল ইসলাম ও কাচু প্রামানিক। পরে গ্রামের কয়েকজন মোড়ল একত্র হয়ে দুই যুবককে রশি দিয়ে গাছে বেঁধে সালিস বসায়। অমানবিক নির্যাতন ও গাছে বেঁধে হেনস্তার সময় গ্রাম্য মোড়লদের হাতে-পায়ে ধরেও রক্ষা পায়নি ওই দুজন। তাঁরা আহত হলেও চিকিৎসা করানো হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। এ সময় সড়কের মোড়ে নির্যাতনের সময় লোকজন ভিড় জমান। ওই দুই যুবককে রক্ষায় কেউ এগিয়ে আসেনি। তবে কয়েকজন ব্যক্তি ওই যুবকদের মারধর না করার অনুরোধ করলেও গ্রাম্য মোড়লরা ছিলেন বেপরোয়া। </p> <p>নির্যাতনের শিকার সুমন বলেন, ‘তাঁরা বাবা-ছেলে অটোভ্যান চালিয়ে রোজগার করেন। সকালে দুই বন্ধু অটোভ্যান নিয়ে নন্দীগ্রাম শহরের দিকে যাচ্ছিলেন। নামুইট মোড়ে ভ্যান থামানোর সঙ্গে সঙ্গে পেছন থেকে চোর চোর করে চিৎকার করে নামুইট গ্রামের মাতব্বর নজরুল। কয়েকজন মোড়ল ও স্থানীয় লোকজন এসে যাচাই না করেই দুই যুবককে মারতে মারতে রাস্তার পাশে নিয়ে যায়। কিছু বুঝে ওঠার আগেই চোর আখ্যা দিয়ে একঘণ্টা অমানবিক নির্যাতন করা হয়। প্রমাণ ছাড়া মারধরের বিষয়ে উপস্থিত কয়েকজন প্রশ্ন তোলায় ওই দুজনকে মসজিদের ভেতর নিয়ে রাখা হয়। পরে সেখানে প্রায় আধাঘণ্টা নির্যাতনের পর তাদের নামুইট তিনমাথা মোড়ে এনে কড়ইগাছের সঙ্গে রশি দিয়ে বেঁধে রাখা হয়। আমরা এর বিচার চাই।’</p> <p>গ্রাম্য মাতব্বররা দাবি করেন, ফজর নামাজ শেষে মসজিদ থেকে মুসল্লিরা চলে যাওয়ার পর দুই কিশোর দানবাক্স থেকে টাকা চুরি করে। তাদের আটক করে শাসন করে ছেড়ে দেওয়া হয়।</p> <p>নন্দীগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজমগীর হোসাইন বলেন, চুরির অপবাদে গাছে বেঁধে হেনস্তা ও নির্যাতনের ঘটনায় জড়িতদের ছাড় দেওয়া হবে না। ভিডিওসহ তথ্য পেয়েই অভিযানে নেমেছে পুলিশ। এ ঘটনায় আটজনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে।</p>