<p>দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর অবশেষে নওগাঁর সাপাহারে অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার অনুমোদন লাভ করায় সাপাহারবাসীর দীর্ঘ দিনের স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে। গত ১২ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর অনুমোদন দিয়েছেন।</p> <p>জানা গেছে বিগত কয়েক বছর আগে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় কর্তৃক দেশের প্রতিটি জেলায় বেকার যুবকদের মাঝে কর্ম সৃজন ও কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে একটি করে অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার ঘোষণা দেন। সে থেকেই এলাকার জাতীয় সংসদ সদস্য বাবু সাধন চন্দ্র মজুমদার এমপি, তৎকালীন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব শামসুল আলমশাহ চৌধুরী ও তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ ফাহাদ পারভেজ বসুনীয়া সম্মিলিতভাবে নওগাঁ জেলার সীমান্তবর্তী সাপাহার উপজেলাকে অর্থনৈতিক অঞ্চল হিসেবে স্বীকৃতিদানের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগে জোর  সুপারিশ পাঠান। </p> <p>সে লক্ষ্যে ওই নির্বাহী অফিসার তৎক্ষণাত অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠায় উপজেলা সদরের অদুরে খেড়ুন্দা মৌজায় সাপাহার-খঞ্জনপুর বিওপি ক্যাম্প রাস্তার উত্তর পাশে জাতীয় সড়ক, নদী, আকাশ পথ, বিদ্যুৎব্যবস্থাসহ যাবতীয় অবকাঠামোগত সুবিধাদির প্রতি লক্ষ্য রেখে ২৫৪.১৫ একর সম্পত্তির অধিগ্রহণের প্রস্তাব জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগে পাঠিয়েছিল। বর্তমানে তারই ফলশ্রুতিতে মাননীয় খাদ্যমন্ত্রী বাবু সাধন চন্দ্র মজুমদার, বর্তমান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ শাহজাহান হোসেন ও নির্বাহী অফিসার কল্যান চৌধুরীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ১২ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী তার কার্যালয়ে সাপাহারে অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার অনুমোদন দেন। </p> <p>সাপাহার উপজেলা নির্বাহী অফিসার কল্যান চৌধুরী নওগাঁর সাপাহারে অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নীতিগত অনুমোদনের বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, সাপাহার এলাকায় ২৫৪.১৫ একর জমির ওপর এই অর্থনৈতিক অঞ্চলটি গড়ে উঠবে। এরই মধ্যে সেখানে জমি বন্দোবস্ত ও অধিগ্রহণ করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রশাসনিক দপ্তর থেকে চিঠি পাঠানো হয়েছে বলেও তিনি জানান। সাপাহারবাসীর আশা উপজেলায় অর্থনৈতিক অঞ্চলটি প্রতিষ্ঠিত হলে এই উপজেলাসহ পাশের আরো কয়েকটি উপজেলার ব্যাপক উন্নয়ন ঘটবে। সেই সাথে অত্র এলাকার হাজার হাজার বেকার যুবকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। </p> <p>৬টি ইউনিয়ন নিয়ে এই উপজেলা গঠিত। বৃটিশ ও পাকিস্তান শাসনামলে উপজেলাটি পোরশা থানার অর্ন্তভুক্ত ছিল। পরবর্তীতে এলাকাবাসীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ১৯৭৯ সালের অক্টোবর মাসে পোরশা থানা হতে পৃথক হয়ে সাপাহার থানায় রুপান্তরিত হয়। স্বাধীনতাপরবর্তী থানা হলেও বর্তমানে এই উপজেলায় প্রায় ২ লাখ মানুষের বসবাস। ভৌগলিক দিক দিয়ে সাপাহার উপজেলা একটি বরেন্দ্র এলাকা। এখানকার প্রধান অর্থকরি ফসল ধান, গম ও আম প্রধান। সীমান্তঘেঁষা উপজেলা হলেও ইতোমধ্যে সাপাহার উপজেলা শিক্ষা, উন্নয়ন ও শিল্পের দিক দিয়ে দেশের বিভাগীয় ও কেন্দ্রীয় পর্যায়ে বেশ সুনাম কুড়িয়েছে। উপজেলা সদরে অনার্স মাস্টার্সসহ ১টি সরকারী ডিগ্রি কলেজ, অনার্সসহ একটি মহিলা ডিগ্রি কলেজ, স্বনামধন্য পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, আলহেলাল একাডেমি স্কুল ও কলেজসহ অসংখ্য মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। সদরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বেশ কয়েকবার বিভাগীয় পর্যায়ে শিক্ষার দিক দিয়ে ১ম স্থান অধিকার করেছে। বর্তমানে জেলার মধ্যে সাপাহার উপজেলা একটি শিক্ষা নগরী হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছে। সাপাহার উপজেলার সাথে দেশের রাজধানীসহ বিভিন্ন অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যাবস্থা যথেষ্ট উন্নত। </p>