<p>নওগাঁর আত্রাই-রাণীনগরে চলতি রবিশস্য মৌসুমে আলুর বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। দু’টি উপজেলার ১৬টি ইউনিয়নের চাষযোগ্য জমিতে মাঠে মাঠে এখন শুধু আলু গাছের সবুজ রং এর সমরাহ। এ বছর বড় ধরণের বন্যা না হওয়ার কারণে রোপ-আমন ধান কাটার সাথে সাথে মাঠে রবিশস্যের উপযুগি চাষযোগ্য জমিতে কৃষকরা আগাম জাতের আলু চাষ করেছে। সরকার পর্যায় থেকে কৃষকদের মাঝে কৃষি উপকরণ সহ রাসায়নিক সার বিনা মূল্যে যথা সময়ে বিতরণ করায় এসব এলাকার কৃষকদের যথা সময়ে আলু লাগানো সম্ভব হয়েছে।</p> <p>চলতি রবিশস্য মৌসুমে কোন প্রকার প্রাকৃতিক দূর্যোগ হানা না দেওয়ায় এবং আলু চাষের অনুকূল পরিবেশ থাকায় নিবির পরিচর্যা, স্থনীয় কৃষি বিভাগের যথাযথ পরামর্শ ও আবহাওয়া ভালো থাকার কারণে রোগবালাই মুক্ত হওয়ায় অন্যান্য রবিশস্যের পাশাপাশি আলুর বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। গ্রামীণ জনপদের প্রান্তিক কৃষকরা এবার ডায়মন্ড, লালপাকরী ও দেশি জাতের আলু লাগিয়েছে। যথা সময়ে আলু ঘরে তুলতে পাড়লে এবং বাজারের চাহিদা ও মূল্য ভাল থাকলে আলু চাষে কৃষকদের আগ্রহ আরো বৃদ্ধি পাবে বলে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা মনে করছেন।</p> <p>জানা গেছে, চলতি রবিশস্য মৌসুমে রাণীনগর উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে ১হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও এবছর ১৪শ’ হেক্টর জমিতে আলুর চাষ হয়েছে। আত্রাইয়ে ৮টি ইউনিয়নে আলু চাষ হয়েছে ২ হাজার ৮শ’ ৯০ হেক্টর জমিতে। মাঠ পর্যায়ে আলু চাষিদের কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে যথাযথ পরামর্শ ও প্রত্যক্ষ কারিগরী সহযোগিতার কারণে আলু ক্ষেতে রোগ-বালাই অনেকটায় কম। তবে ঘনকুয়াশা আর হিমেল বাতাসের কারণে আলু চাষিরা কিছুটা আতংকে রয়েছে। আগামী ইরি-বোরো ধান উৎপাদনের প্রস্তুতি হিসেবে প্রান্তিক চাষিরা কিছুটা বাধ্য হয়েই অন্যের জমি বর্গা নিয়ে আলু, সরিষা, গম ও ভোট্টা চাষে অতি আগ্রহী হয়ে উঠে। রাণীনগর উপজেলার সদর, বড়গাছা, মিরাট, কাশিমপুর, গোনা, পারইল আত্রাই উপজেলার বড় কালিকাপুর, হাট কালুপাড়া ও সাহাগোলা ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি আলু চাষ হয়েছে বলে কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে।</p> <p>রাণীনগর উপজেলার ঘোষগ্রাম ব্লকের মালঞ্চি গ্রামের কৃষক বেলাল হোসেন জানান, আমি এবছর অন্যান্য রবিশস্যর পাশাপাশি প্রায় ১ বিঘা জমিতে আলুর চাষ করেছি। কৃষি অফিসের পরামর্শক্রমে ভাল জাতের দেশী আলুর বীজ কিনে জমিতে লাগিয়েছি। এপর্যন্ত আলু গাছের গঠন দেখে মনে হচ্ছে আশানুরুপ ফলন পাব।রাণীনগর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো: শহিদুল ইসলাম জানান, রাণীনগরে বিগত বছরের তুলনায় এবারও আসানুরুপ আলু চাষ হয়েছে। যথা সময়ে জমি চাষ যোগ্য হওয়ায় এলাকার কৃষকরা সুযোগ বুঝে আলু লাগিয়েছে। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে তাদেরকে যথাযথ পরামর্শ ও পরিচর্চার বিষয়ে দিক নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে।</p> <p>আত্রাই উপজেলা কৃষি আফিসার কে এম কাওসার হোসেন জানান, প্রাকৃতিক দূর্যোগে কোন প্রকার ক্ষতি না হলে আত্রাই উপজেলায় আলুর বাম্পার ফলনের সম্ভবনা রয়েছে। শুধু তাই নয় আলু চাষের জমিগুলোতে কিছু পরিমান উদ্ধবৃত্ত সারের শক্তি থাকায় কৃষকরা ইরি-বোরো চাষেও এর সুফল পাবে।</p>