<p>গতকাল বৃহস্পতিবার গায়ে হলুদের সব আয়োজন শেষ হয় সাভার পৌর এলাকার আড়াপাড়া মহল্লায় মেরিট ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী হালিমা আক্তারের (১৪)। আজ শুক্রবার বাদ জুমা তার বিয়ে।</p> <p>হালিমারা যে বাড়িতে ভাড়া থাকে পাত্র সেই বাড়িরই অপর এক ভাড়াটিয়া  হারুন অর রশিদ (২২)। পেশায় নির্মাণ শ্রমিক। বিয়ের সব প্রস্তুতি এবং রানা-বান্না যখন সমাপ্তির পথে তখন এ বাল্যবিয়ের খবর পান সাভার পৌরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সানজিদা শারমীন মুক্তা, আড়াপাড়া অগ্রগামী শিশু পরিষদের সদস্য ও কয়েকজন সাংবাদিক। এদের হস্তক্ষেপে অবশেষে বন্ধ হয়ে যায় শিশু হালিমার এ বিয়ে।</p> <p>হালিমার বাবা আব্দুল বারেক মিয়া পেশায় রিকশাচালক আর মা সখিনা বেগম গৃহকর্মে নিয়োজিত। বাড়ি ময়মনসিংহ জেলায়। সে পরিবারসহ দীর্ঘদিন ধরে সাভার আড়াপাড়া এলাকায় বসবাস করে আসছে। হালিমার বাবা একই বাড়ির অপর ভাড়াটিয়া হারুন অর রশিদের সঙ্গে বিয়ে ঠিক করেন মেয়ের। স্কুল ছাত্রীর বিয়ের খবর পেয়ে হালিমাদের বাড়িতে গিয়ে উপস্থিত হন পৌরসভার কাউন্সিলর সানজিদা শারমীন মুক্তা, আড়াপাড়া অগ্রগামী শিশু পরিষদের সদস্যরা, শিশুদের নিয়ে কর্মরত উন্নয়ন সংস্থা ভার্কের প্রকল্প ব্যবস্থাপক বাবুল মোড়লসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।</p> <p>কিন্তু এরা গিয়ে হালিমার বাবা বা হারুন অর রশিদের পরিবারের কাউকে পাননি। বাল্যবিয়ের কুফল ও সরকারের আইনবিরোধী অপরাধ সম্পর্কে হালিমার মাকে বোঝানোর পর তিনি তার ভুল বুঝতে পারেন এবং তাৎক্ষণিক কিশোরী মেয়েকে  বিয়ে না দেওয়ার জন্য প্রতিজ্ঞা করেন। তবে জেল-জারিমানার ভয়ে হালিমার বাবা ও পাত্রের বাবা গা ঢাকা দেন।</p> <p>পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সানজিদা শারমীন মুক্তা বলেন, "বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বাল্যবিয়ে একটি সামাজিক ব্যধি। সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনের জন্য যেখানে বিভিন্নমুখী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, সেখানে বাল্যবিয়ে ও এর পরিণতি সংক্রান্ত বিষয়ে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি কোনো সচেতন নাগরিকের কাম্য হতে পারে না। তাই এ অবস্থা উত্তরণে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। হালিমাদের বাঁচাতে হবে।" </p>