<p>ইসলাম ধর্ম, পবিত্র হজ্ব ও তাবলিগ জামাত সম্পর্কে কটুক্তি করায় সোনালী ব্যাংক লিমিটেড ভোলা আঞ্চলিক শাখার এজিএম মধুসূদন হালদারের বিরুদ্ধে লিগ্যাল নোটিশ দিয়েছেন ওই ব্যাংকের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আলহাজ্ব সৈয়দ হারিছুর রহমান। তার পক্ষে ভোলা জজ কোর্টের আইনজীবী এডভোকেট আলহাজ্ব বশির উদ্দিন আহম্মদ।</p> <p>গত ২৪মে এ আইনী নোটিশ দেওয়া হয়। নোটিশ দাতা তার আইনী নোটিশে বলেন, সোনালী ব্যাংক লিমিটেড ভোলা আঞ্চলিক শাখার এজিএম মধুসূদন হালদার একজন উগ্র হিন্দু মৌলবাদী। তিনি মুসলিম ধর্মাবলম্বী লোককে ভালো চোখে দেখেননা। তিনি সোনালী ব্যাংক লিমিটেড ভোলা আঞ্চলিক শাখায় যোগদানের পর থেকেই এ শাখায় কর্মরত মুসলমান কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ইসলাম ধর্ম পালনের মৌলিক উপাদান নামাজ পালনে বাঁধা প্রদান করেন। তাদেরকে মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়তে নিষেধ করেছেন। যা ইসলাম ধর্মের অবমাননা। তিনি ব্যাংকের ব্যবস্থাপক আলহাজ্ব তাজুল খালিদকে হজ্বব্রত পালনের উদ্দেশ্যে মক্কা শরীফ যাওয়ার পূর্বে বিদায় অনুষ্ঠানে মুসলীম রীতি নীতির কঠোর সমালোচনা করেন। এমনকি তার দাড়ি নিয়েও কটুক্তি করেন। তিনি ইসলাম ধর্মের অন্যতম স্তম্ভ পবিত্র হজ্বের অপব্যাখ্যা দেন। </p> <p>তিনি বলেন, বাংলাদেশে বসেই হজ্ব পালন করা যায়। ভোলা শাখার কর্মচারি মো. কালাম তিন দিনের সরকারি ছুটিতে তাবলীগ জামাতে যাওয়ায় এজিএম তাকে তার চেম্বারে ডেকে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করেন। তাবলিগ জামাতকে তিনি সন্ত্রাসী সংগঠন বলেও আখ্যায়িত করেন। হযরত মোহাম্মদ (সঃ) এর একাধিক বিবাহ নিয়েও প্রশ্ন তোলেন সোনালী ব্যাংক লিমিটেড ভোলা আঞ্চলিক শাখার এজিএম মধুসুদন হালদার। </p> <p>এ নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন ব্যাংকের অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারিরা। তারা সম্প্রতি এজিএম মধুসূদন হালদারের বিরুদ্ধে একটি লিফলেটও বিতরণ করেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ব্যাংকের কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী এজিমের বিরুদ্ধে করা অভিযোগগুলো স্বীকার করেন। </p> <p>এদিকে ইসলাম ধর্মের অবমাননার শাস্তির দাবিতে আজ মঙ্গলবার সকালে সোনালী ব্যাংক লিমিটেড ভোলা আঞ্চলিক শাখার এজিএম মধুসূদন হালদারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ঈমান আক্বদা সংরক্ষণ কমিটি ভোলা জেলা শাখা। সকাল সাড়ে ১১টার দিকে শহরের মহাজন পট্টি বড় মসজিদের সামনে থেকে মিছিল শুরু করলে পুলিশ ওই মিছিলে বাঁধা দেন বলে অভিযোগ করেন কমিটির সহ-সভাপতি মাওলানা তাজউদ্দিন ফারুকী। </p> <p>ভোলা সদর মডেল থানার ওসি মীর খায়রুল কবির বলেন, ঈমান আক্বদা সংরক্ষণ কমিটি মিছিল করেনি। তারা মসজিদের ভেতরেই সমাবেশ করে ডিসি ও এসপির কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেন। স্মারকলিপি পাওয়ার কথা স্বীকার করে পুলিশ সুপার মো. মোকতার হোসেন বলেন, জেলা প্রশাসক বরাবরে স্মারকলিপিটি দেওয়া হয়েছে। তার অনুলিপি আমিও গ্রহন করেছি। সে মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি। </p> <p>অপরদিকে বিক্ষোভ মিছিলের খবর পেয়ে গা ঢাকা দিয়েছেন সোনালী ব্যাংক লিমিটেড ভোলা আঞ্চলিক শাখার এজিএম মধুসূদন হালদার। ব্যাংকে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। দুপুরের দিকে ব্যাংকের সামনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন থাকতে দেখা গেছে।</p> <p>এজিএম’র দায়িত্বে নিয়োজিত সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার ফজলুল বাশার বলেন, এজিএম ব্যাংকে নেই। তিনি বরিশাল জিএম’র কার্যালয়ে গেছেন। অভিযোগের বিষয়ে সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার ফজলুল বাশার বলেন, গত প্রায় এক বছর আগে এজিএম মধুসুদন হালদারের সঙ্গে অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা আলহাজ্ব সৈয়দ হারিছুর রহমানের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়েছিল। এর জের ধরেই হারিছুর রহমানের ইন্ধনে এজিএম’র বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল ও স্মারকলিপি কর্মসূচি করা হয়েছে। </p> <p>এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে সোনালী ব্যাংক লিমিটেড ভোলা আঞ্চলিক শাখার এজিএম মধুসূদন হালদার বিকেলে কালের কণ্ঠকে বলেন, আমার বিরুদ্ধে যারা এসব অভিযোগ করেছেন তারা এক সময়ে আমার খুব ঘনিষ্ট ছিল। সেই সুবাদে অনেক সময়েই ব্যাংকে আসা-যাওয়া করত। অনেক আবদারও ছিল। তাদের সেই আবদার রাখতে না পারায় আমার বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িকতার অভিযোগ করেছেন। কিন্তু আমি সাম্প্রদায়িক নই। </p> <p>তিনি আরো বলেন, আমি এতদিন খুব বিপদে ছিলাম। আমার জীবনও শঙ্কটাপন্ন ছিল। তাই অফিস আমাকে ভোলা থেকে গতকালই বদলি করে দিয়েছেন। </p>