সোনালি শহর লা রিনকোনাডা

&lt;p&gt;আন্দিজ পর্বতমালা লাতিন আমেরিকা বা দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের একদম উত্তর থেকে দক্ষিণ পর্যন্ত বিস্তৃত। উত্তরে ভেনিজুয়েলা থেকে শুরু হয়ে শেষ হয়েছে একদম আর্জেন্টিনা-চিলির দক্ষিণ সীমান্তে গিয়ে। পর্বতমালার যে অংশটুকু পেরুর ভাগে পড়েছে, তার একদম শেষ প্রান্তে লা রিনকোনাডার অবস্থান। পেরু-বলিভিয়া সীমান্তের একদম কাছেই এই শহর। এটাই পৃথিবীর সর্বোচ্চ শহর। মানে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এই শহরের উচ্চতাই সবচেয়ে বেশি, প্রায় পাঁচ হাজার ১০০ মিটার।&lt;/p&gt; &lt;p&gt;&lt;img alt=&quot;&quot; src=&quot;/ckfinder/userfiles/images/print/2016/Feature -2016/October/23-10-2016/kalerkantho-23-10-2016-2.jpg&quot; style=&quot;float:left; height:225px; margin:12px; width:400px&quot; /&gt;এই লা রিনকোনাডায় মানুষ বছরজুড়েই বাস করে। কাগজে-কলমে ওটাকে শহরও বলা হয়। কিন্তু আদতে ওখানে শহরের কোনো সুযোগ-সুবিধার বালাই নেই। তার পরও মানুষ ওখানে গিয়ে বাস করে, তার কারণ&mdash;সোনার খনি। সোনার লোভে প্রায় প্রতিবছরই পেরুর বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে মানুষ আসে এখানে। চোখে-মুখে ভাগ্য বদলে নেওয়ার স্বপ্ন এঁকে আনে। শেষ পর্যন্ত অবশ্য খুব বেশি মানুষ তাদের ভাগ্য বদলাতে পারে না। তবে তাদের জীবন বদলে যায় ঠিকই। ওখানকার অমানবিক জীবনযাপন আর অস্বাস্থ্যকর আবহাওয়ায় কারো জীবন না বদলানোটাই অস্বাভাবিক।&lt;/p&gt; &lt;p&gt;লা রিনকোনাডার জীবন এতটাই কঠোর, ওখানকার আরেকটা নামই হয়ে গেছে &lsquo;পুরুষদের আবাসভূমি&rsquo;। একে তো সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে অনেক উঁচু, তাই ওখানে বাতাসের চাপ কম, ঠাণ্ডাও বেশি। ফলে কাজ করাটা এমনিতেই বেশ কষ্টের। তার ওপর ওটা আন্দিজের বরফ-ঢাকা পার্বত্য অঞ্চল। সব মিলিয়ে ওখানকার গড় তাপমাত্রা মাত্র ১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বৃষ্টিও নিতান্ত কম হয় না। বছরে গড়ে প্রায় ৭০৭ মিলিমিটার। পরিমাণটা পৃথিবীর মোট স্থলভাগের গড় বৃষ্টিপাতের কাছাকাছিই (৭১৫ মিলিমিটার)। আবার এই লা রিনকোনাডায় বসবাসকারী শ্রমিকরা যখন খনির ভেতরে ঢোকে, ওখানে আবার ভয়ংকর গরম। খনির ভেতরে বাতাসের আর্দ্রতাও খুব কম। তাই কাজ করার সময় রীতিমতো হাঁসফাঁস করতে হয় শ্রমিকদের।&lt;/p&gt; &lt;p&gt;&lt;img alt=&quot;&quot; src=&quot;/ckfinder/userfiles/images/print/2016/Feature -2016/October/23-10-2016/kalerkantho-23-10-2016-3.jpg&quot; style=&quot;float:right; height:200px; margin:12px; width:500px&quot; /&gt;অথচ এই ভয়ংকর আবহাওয়ায়ই বসবাস করছে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ। অবশ্য বছর পাঁচেক আগেও শহরের জনসংখ্যা এর অর্ধেক ছিল। ইদানীং প্রতিবছরই হাজার হাজার মানুষ আসছে খনিতে কাজ করতে। অনেকেই এই খনিগুলোয় দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছে। এমন লোকও আছে, যারা এই খনিগুলোয় ২০ বছর ধরেও কাজ করছে। এই বিপুলসংখ্যক লোকের জন্য শহরটায় নেই ন্যূনতম পৌর সুবিধা। বরফ পড়ে গলে ওখানকার রাস্তাগুলো সব সময়ই কর্দমাক্ত হয়ে থাকে। বাড়িগুলোয় পানির সংযোগ নেই, পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা নেই, পুরো শহরে কোনো পাবলিক টয়লেটও নেই। ওখানকার বেশির ভাগ বাসিন্দা যে লেক থেকে পানি সংগ্রহ করে, সেই লেকটির পানিও দূষিত। পাথর থেকে সোনা আলাদা করতে যে পারদ ব্যবহার করা হয়, সে পারদের উচ্ছিষ্ট অংশগুলো গিয়ে জমা হয় লেকে। সব মিলিয়ে এমন অস্বাস্থ্যকর জায়গায় যা হওয়ার কথা, তা-ই হয়। শ্রমিকরা প্রায়ই শ্বাসকষ্ট আর ডায়রিয়ায় ভোগে। আর উচ্চতাজনিত সমস্যা, মাথা ব্যথা, মাথা ঘোরা, বমি-বমি ভাব, অনিদ্রা, মানসিক অবসন্ন্নতা তো নিত্যসঙ্গী। বলাই হয়, লা রিনকোনাডা শ্রমিকদের খুন করে। হয় সে খনির দুর্ঘটনায় মারা পড়বে, নইলে কোনো রোগে ভুগে ধুঁকে ধুঁকে মারা পড়বে।&lt;/p&gt; &lt;p&gt;তবুও যে খনির সোনার আশায় শ্রমিকরা দলে দলে গিয়ে লা রিনকোনাডায় জড়ো হচ্ছে, সেই খনির অবস্থানও শহরে নয়। পাশের এক পর্বতে। সেখানে পৌঁছতে শ্রমিকদের তাদের বসতি থেকে সরু একটা পথে হেঁটে এক কিলোমিটারের মতো পাড়ি দিতে হয়। খনির ময়লা-আবর্জনার একটা অংশ আবার এই পথেও ফেলা হয়। কারণ সেই ময়লা-আবর্জনা ফেলার ভালো কোনো ব্যবস্থাও ওখানে নেই। এই খনিটা অবশ্য বেশ লক্ষ্মী। বছরে ১০০ টনেরও বেশি ধাতু ওখান থেকে উত্তোলিত হয়। এর মধ্যে আছে সোনাও। আর এই সোনার জন্যই শ্রমিকদের এত কষ্ট স্বীকার, এত যুদ্ধ-সংগ্রাম।&lt;/p&gt; &lt;p&gt;এই খনির শ্রমিকরা ওই অঞ্চলে প্রচলিত একটা বিশেষ চুক্তিতে কাজ করে। সে পদ্ধতির নাম কাচোরিও। এই পদ্ধতিতে শ্রমিকরা কম্পানির কাছ থেকে কোনো টাকাপয়সা পায় না। তবে প্রতি ৩০ দিন কাজ করার পর, এক-দুই দিন কম্পানি তাদের খনির স্বাধীনতা দেয়। মানে ওই দিন শ্রমিকরা খনি থেকে যে যা উত্তোলন করবে, তা সবই তাদের। এ পদ্ধতিতে কিছু শ্রমিক হয়তো বরাতজোরে বেশ দুপয়সা কামিয়ে ফেলে। কিন্তু বেশির ভাগ শ্রমিকের ভাগ্যেই দিন গুজরানের বেশি টাকাকড়ি জোটে না। তবু ওখানকার শ্রমিকরা এই কাচোরিওতে আস্থা রাখে। কারণ তারা যে স্বপ্ন দেখে লা রিনকোনাডায় আসে, সে স্বপ্ন কেবল এই কাচোরিও পদ্ধতিতেই সম্ভব। তাই সম্প্রতি পেরুর সরকার এই পদ্ধতির সংস্কারের উদ্যোগ নিলেও, তাতে বাদ সাধে স্বয়ং শ্রমিকরাই। তাদের আপত্তির অবশ্য আরো একটা কারণ আছে। এই পদ্ধতিতে যে সোনা চোরাচালানেরও একটা সুযোগ থাকে।&lt;/p&gt; &lt;p&gt;এই কাচোরিও ব্যবস্থায় যে শ্রমিকরা বেশ দুপয়সা কামাতে পারে, তাদের জন্য আবার শহরটায় পয়সা ওড়ানোর কোনো ব্যবস্থাই নেই। আছে কেবল কতগুলো সস্তা বার আর ক্লাব। সেগুলোতেও তেমন ভালো কিছু পাওয়া যায় না। কাজেই তাদের বিনোদন মানে মাতলামো করা। আর শহরে আইন-কানুনের তো কোনো বালাই নেই। এমনকি মাতাল শ্রমিকদের মধ্যে খুনোখুনির ঘটনাও ঘটে।&lt;/p&gt; &lt;p&gt;লা রিনকোনাডায় বেশ কিছু নারীও থাকে। এরা মূলত লা রিনকোনাডায় ঘুরে ঘুরে সোনা খুঁজে বেড়ায়। তাদের বলা হয় পাল্লাকুয়েরাস। তবে এদের খনির ভেতরে ঢোকার অনুমতি নেই। ওখানকার বিশ্বাস, মেয়েরা খনিতে ঢুকলে অমঙ্গল হয়। খনি থেকে উত্তোলিত পাথর থেকে সোনাসহ বিভিন্ন ধাতু আলাদা করে ফেলার পর সেগুলো খনির বাইরে ফেলে দেওয়া হয়। এরা সেই ফেলে দেওয়া পাথরের স্তূপ ঘেঁটে বেড়ায়, তাতে কোনো সোনা বা দামি ধাতু পাওয়া যায় কি না। ওখানে এই পাল্লাকুয়েরাস আছে প্রায় ৭০০ জন। এদের বেশিরভাগই খনিতে কাজ করতে আসা শ্রমিকদের স্ত্রী।&lt;/p&gt;

দরজার ওপাশে

সোনালি শহর লা রিনকোনাডা

notdefined

notdefined

প্রাসঙ্গিক

সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ

হজযাত্রীর কোটা, সৌদি পর্বের খরচ ও ভিসা নিয়ে জটিলতা

লাইনের দুর্বলতা ঢাকার বন্দি, তাপের ওপর দায় চাপাচ্ছে রেল

রুমায় তুমুল গোলাগুলি আতঙ্ক, হতাহতের শঙ্কা

রাতে নামাজ পড়ে ঘুমানোর পর সকালে মিলল ঝুলন্ত লাশ

ইরানে আঘাত হেনেছে ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র

তিন বছরের শিশু ধর্ষণ মামলার আসামি গ্রেপ্তার

কালীগঞ্জে বাসের ধাক্কায় নারী পোশাক শ্রমিকের মৃত্যু

উপজেলার ভোট বর্জনেও প্রচারণা চালাবে বিএনপি

ঋণের চাপে দুই সন্তানের জননীর আত্মহত্যা

পটিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় তিনজনের মৃত্যু, আহত ৪

হেলিকপ্টারে বউ নিয়ে এলেন ছাত্রলীগ নেতা সিয়াম

‘মেয়রের পাওয়ার আছে তিনি খেলবেন, আমরাও মামলা করব’

মুস্তাফিজের ১ উইকেট চেন্নাইয়ের হার

এআই মডেলের আকর্ষণে মুগ্ধ অনুরাগীরা

৬ হাজার ৬৬০ ধাপের সিঁড়িতে ভয়ে কাঁপন

সেমিনার

প্রথম ধাপে ভোট পড়েছে প্রায় ৬০%

হজযাত্রীর কোটা, সৌদি পর্বের খরচ ও ভিসা নিয়ে জটিলতা

আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে সয়াবিন তেল

থার্ড টার্মিনালের বাউন্ডারি ভেঙে ঢুকে গেল বাস, প্রকৌশলী নিহত

শিশু রোগী নিয়ে আতঙ্কের প্রহর তদন্ত কমিটি

৭৮৭ ড্রিমলাইনারে গুরুতর ত্রুটি সব বিমান সারানোর পরামর্শ

স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ পাঁচজন গ্রেপ্তার

বিদায় জাতীয় পতাকার অন্যতম নকশাকার শিব নারায়ণ দাশ

মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি শ্রমিকদের পরিস্থিতি অসম্মানজনক

‘রাজকুমারে’ মুগ্ধ দর্শনার্থীরা

ভিসা নিয়ে টালবাহানা হুমকির অভিযোগ

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি আরো ৭ দিন বাড়ানোর দাবি

ঢাকার এই দাবদাহ দীর্ঘদিনের পরিবেশ ধ্বংসের ফল

বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের সম্মেলন, ঢাকায় মানববন্ধন

সর্বাধিক পঠিত

ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাল ইসরায়েল

দেলোয়ারকে দেখতে গিয়ে পলক বললেন, আমি লজ্জিত-দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী

ইসফাহানে তিন ইসরায়েলি ড্রোন মাঝ আকাশেই ধ্বংস করল ইরান

‘পুরোটাই একটা নোংরামি মনে হচ্ছে’, শিল্পীদের নির্বাচন প্রসঙ্গে রুবেল

তিন বোন ভোট দিলেন একসঙ্গে

মধুখালীতে মন্দিরে অগ্নিকাণ্ডে এলাকা রণক্ষেত্র, নিহত ২

গাজায় যুদ্ধবিরতি : মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকায় থাকতে চাইছে না কাতার?

পরস্পরকে নিয়ে ভুল হিসাব-নিকাশ ইরান ও ইসরায়েলের?

মুস্তাফিজকে নিয়ে আকাশ, 'বাংলাদেশ কেন এমন করে?'

বগুড়ায় স্বামীকে জিম্মি করে স্ত্রীকে গণধর্ষণ, গ্রেপ্তার ৫

ভারতে যেমন হলো প্রথম দিনের ভোটগ্রহণ

ঈদের পরই বাড়ল সবজি, আলু, পেঁয়াজ, আদা ও রসুনের দাম

তীব্র তাপপ্রবাহ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আরো ৭ দিন বন্ধের দাবি

দাবদাহে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের স্বস্তি দিতে ডিএমপি কমিশনারের উদ্যোগ

কিশোর গ্যাং ‘এফ-১০’ প্রশ্রয়দাতা চেয়ারম্যান

দেশজুড়ে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি

ইরাক সিরিয়াতেও বিস্ফোরণের শব্দ, ইসরায়েলে সতর্কতার সাইরেন

নিজের শেষ সিনেমা থেকে সরে গেলেন টারান্টিনো

শাহজালালের থার্ড টার্মিনালে ঢুকে গেল রাইদা বাস, প্রকৌশলী নিহত

ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, বদলে যাচ্ছে মিরপুরের সড়ক ও পার্কের নাম

শিল্পী সমিতির নির্বাচন : ভোট দিলেন ডা. এজাজ-আসাদুজ্জামান নূর

ইরানের ওপর ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়নি : ইরানি কর্মকর্তা

চাঁদপুরে সেই পূবালী ব্যাংকের ৮ কর্মকর্তা বদলি

১২ ফুটের অজগরটির প্রাণ গেল গাড়িচাপায়

১০ গডফাদারের ছায়ায় ৬৩ মাদক কারবারি

উপজেলা নির্বাচন : মন্ত্রী-এমপির প্রার্থীদের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ

ইউক্রেনে হামলায় শিশুসহ নিহত ৮, রুশ বোমারু বিমান বিধ্বস্ত

হাওরে ধান কিনতে এসে লাশ হলেন ব্যবসায়ী

ভারতে লোকসভা নির্বাচন : পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষ

জুমার দিনের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি আমল

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন