সিরিয়ায় বিদ্রোহীদের দখলে থাকা সর্বশেষ প্রদেশ ইদলিবে নতুন করে শুরু হওয়া লড়াইয়ের প্রথম দিনে তিন শিশুসহ ১৫ জন নিহত হয়েছে। ইদলিব সংকট নিয়ে ইরানের রাজধানী তেহরানে গত শুক্রবার একদিকে ইরান-রাশিয়া-তুরস্কের প্রেসিডেন্টরা বৈঠক করেছেন, অন্যদিকে রুশ বাহিনী ও সিরীয় বিদ্রোহীদের পাল্টাপাল্টি হামলায় হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।
ইদলিবের বিদ্রোহীদের দমনে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের অনুগত বাহিনী রাসায়নিক অস্ত্র হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেযুক্তরাষ্ট্র এমন দাবি করে জানিয়েছে, ইদলিবে রাসায়নিক অস্ত্র হামলা হলে তারা ছেড়ে কথা বলবে না। এ নিয়ে উত্তেজনার মধ্যে গত শুক্রবার তেহরানে বৈঠক করেন ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়িপ এরদোয়ান। সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে এ তিনটি দেশ সরাসরি জড়িত। তাদের মধ্যে ইরান ও রাশিয়া সিরিয়ার সরকারের পক্ষে এবং তুরস্ক বেশ কয়েকটি সিরীয় বিদ্রোহীগোষ্ঠীর হয়ে মাঠে রয়েছে। শুক্রবারের বৈঠকে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান ইদলিবে যুদ্ধবিরতি চুক্তি করার আহ্বান জানান। তাঁর এ আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন জানান, তাঁর দেশ ইদলিবে সন্ত্রাসীগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে লড়াই অব্যাহত রাখবে। প্রায় ২৯ লাখ জন-অধ্যুষিত ইদলিবে পুরোদমে যুদ্ধ শুরু হলে বাস্তুহারা লোকজন তুরস্কের দিকে ধেয়ে যাবে, এমন আশঙ্কা মাথায় রেখে এরদোয়ান ইরান ও রাশিয়ার রাষ্ট্রপ্রধানদের উদ্দেশে বলেন, ইদলিব রক্তগঙ্গায় পরিণত হোক, সেটা আমরা চাই না। এরদোয়ানের এ কথার জবাবে রুহানি ও পুতিনের বক্তব্য হলো, ইদলিব থেকে জিহাদিদের অবশ্যই হটাতে হবে। পুতিন তো আরো স্পষ্ট করে বলেছেন, দেশজুড়ে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার অধিকার সিরিয়ার বৈধ সরকারের আছে এবং অবশ্যই তাদের সে নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করতে হবে।
ইরান ও রাশিয়ার এমন দৃঢ় অবস্থান মাঠপর্যায়েও কার্যকর ছিল। তেহরানে ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের দিন সকাল থেকেই ইদলিবে বিমান হামলা করতে থাকে রাশিয়ার বিমানবাহিনী। হামলায় ক্ষয়ক্ষতির ব্যাপারে যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার পর্যবেক্ষণ সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস (এসওএইচআর) জানায়, ইদলিবের দক্ষিণ-পশ্চিমে হায়াত তাহরির আল শাম এবং আহরার আল শাম যোদ্ধাদের অবস্থান লক্ষ্য করে রাশিয়ার চালানো হামলায় চারজন নিহত ও ১৪ জন আহত হয়। সূত্র : এএফপি, বিবিসি।